টাঙ্গাইলের সখীপুর
সেতুর ওপর বাঁশের সাঁকো
বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করায় স্থানীয় লোকজনের দুর্ভোগ কিছুটা লাঘব হয়েছে।
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার ছোটমৌশা-শালগ্রামপুর সড়কে সিলিমপুর খালের ওপর স্থানীয় লোকজনের উদ্যোগে পুরোনো সেতুর ওপর অস্থায়ীভাবে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। এতে তাঁদের দুর্ভোগ কিছুটা লাঘব হয়েছে। দ্রুত সেখানে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার গ্যাসচৌরাস্তা-শালগ্রামপুর পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার সড়কটি অন্তত পাঁচ বছর ধরে পাকা। ওই সড়কের সিলিমপুর খালের ওপর নির্মিত পুরোনো সেতুটি ভেঙে পড়ায় সিলিমপুর, ছোটমৌশা, বড়মৌশা, বেতুয়া, কালিয়ান, শালগ্রামপুর, কৈয়ামধু, দেওবাড়ী, প্রতিমাবংকী, বগাপ্রতিমাসহ ১০ গ্রামের মানুষ চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এ অবস্থায় দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে ২০২০-২১ অর্থবছরে উপজেলার সিলিমপুর খালের ওপর ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। কার্যাদেশ অনুযায়ী চলতি বছরের জুলাই মাসেই সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। অথচ নতুন সেতু নির্মাণ তো দূরের কথা, পুরনো সেতুটির পিলার অপসারণের কাজটুকুও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান করতে পারেনি।
গত শুক্রবার সিলিমপুর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, পুরোনো সেতুর ভাঙা পিলারের ওপর বাঁশের একটি সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। স্থানীয় ব্যক্তিরা আপাতত ওই নড়বড়ে সাঁকো দিয়েই হেঁটে পার হচ্ছেন। সাঁকোর নিচেই লম্বালম্বি খাড়া রয়েছে চিকন রড। পা পিছলে পড়ে গেলেই নিশ্চিত বড় ধরনের দুর্ঘটনা। সেতুর পাশ দিয়ে বিকল্প সড়ক করার নিয়ম থাকলেও তা মানেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রয়োজনের তাগিদেই সেতুর ওপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে পারাপার হন সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা।
ছিলিমপুর গ্রামের কৃষক আবদুল গফুর বলেন, ‘সড়কের দুই পাশ পাকা থাকলেও সেতু না থাকায় এলাকার উৎপাদিত বাঁশ, ধান, শাকসবজি আমরা ভ্যানগাড়িতে করে বাজারে নিয়ে যেতে পারি না। অনেক দূর ঘুরে আমাদের হাট-বাজারে যেতে হয়।’
উপজেলার ছোট মৌশা আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক বলেন, এ সড়ক ছাড়া স্কুলে যাওয়ার অন্য কোনো উপায়ও নেই।
দারিয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, নির্ধারিত সময়ে সেতুটি না হওয়ায় দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। তাই স্কুল কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী আবদুল হালিম এখলাছ গাফিলতি হয়নি দাবি করে বলেন, বছরের শুরুতেই বৃষ্টি হওয়ায় সেতুটির কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। নির্মাণসামগ্রীর দামও বেড়ে গেছে। কাজের মেয়াদ ও বরাদ্দ বাড়িয়ে শুকনা মৌসুমে কাজটি শুরু করার চিন্তাভাবনা রয়েছে।
িপআইও (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘অবগত রয়েছি। মূলত কাজ শুরু করার পরপরই বৃষ্টির কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।’