জাবির সাবেক শিক্ষার্থী নিহতের প্রতিবাদে মানববন্ধন, বাসের রুট পারমিট বাতিলের দাবি

বাসচাপায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী রুবেল পারভেজ নিহতের ঘটনার বিচার চেয়ে মানববন্ধন। আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে
ছবি: প্রথম আলো

ঢাকার ধামরাইয়ে সেলফি পরিবহনের বাসচাপায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী রুবেল পারভেজ নিহতের প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে। আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আরিচাগামী লেনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। মানববন্ধন থেকে রুবেল পারভেজের হত্যাকাণ্ডের বিচার ও নিরাপদ সড়কের পাশাপাশি সেলফি পরিবহনের রুট পারমিট (সড়কে চলাচলের অনুমতি) বাতিলের দাবি জানান তাঁরা।

আরও পড়ুন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রুবেল পারভেজ ৪১তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। তিনি একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ধামরাই থানা বাসস্ট্যান্ডে বাসের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন রুবেল পারভেজ। এ সময় সেলফি পরিবহনের দুটি বাসের রেষারেষিতে একটি বাস যাত্রীদের চাপা দেয়। এতে রুবেলসহ দুজন নিহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গতকাল ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলকারী সেলফি পরিবহনের ২০টি বাস আটক করেন। আজ সকালেও ৫টি বাস আটকসহ মোট ২৫টি বাস আটকানো হয়েছে।

বাসচাপায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী রুবেল পারভেজ নিহতের ঘটনার বিচার চেয়ে মানববন্ধন। আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে
ছবি: প্রথম আলো

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপদেষ্টা আশীষ কুমার মজুমদার বলেন, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সেলফি পরিবহন নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। কারণ, এই সেলফি পরিবহনের বেপরোয়া গতি দিন দিন বেড়েই চলছে। এক হিসাব অনুযায়ী, গত এক বছরে সেলফি পরিবহন ২৯ জনের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আর শত শত মানুষকে আহত করেছে। কাজেই ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে এই সেলফি পরিবহনের চলাচলের কোনো সুযোগ নেই।

আরও পড়ুন

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও সিনেট সদস্য সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘যাঁরা ঢাকা-আরিচা সড়কে চলাচল করেন, তাঁরা সেলফি পরিবহনের আতঙ্ক নিয়ে চলাচল করেন। গতকাল জাবি শিক্ষার্থী রুবেলকে পরিকল্পিতভাবে বাস চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এটার বিচার করতে হবে। এই বিচার না হওয়া পর্যন্ত মহাসড়কে সেলফি পরিবহন চলতে দেওয়া হবে না। সেলফি পরিবহনের চালকদের লাইসেন্স আছে কি না, আমরা সন্দিহান। রুবেলের এই পরিকল্পিত হত্যার বিচার করতে হবে। বিচার না হওয়া পর্যন্ত সেলফি পরিবহন বন্ধ থাকবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘রুবেল পারভেজের যে ক্ষতি হয়েছে, তা আমরা পূরণ করতে পারব না। কিন্তু তাঁর পরিবারের সব ক্ষতিপূরণ সেলফি পরিবহনকে দিতে হবে। সেলফি পরিবহনের রুট পারমিট বাতিল করতে হবে।’ আরেক শিক্ষার্থী এস এম আবদুল মালেক বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি আদায় না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার আবদুর রহমান, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের ধামরাই উপজেলার সহসভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন প্রমুখ।