ক্ষীরশাপাতি আমে ‘জিআই’ ট্যাগ ব্যবহারের সুযোগ, চাষিদের নিবন্ধন শুরু

ক্ষীরশাপাতি আম
ছবি: সংগৃহীত

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য ক্ষীরশাপাতি আম বেচাকেনায় জিআই ট্যাগ ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন চাষিরা। নিবন্ধন ও জিআই ট্যাগ ব্যবহারের সুযোগ পেলে লাভবান হবেন চাষিরা। আজ বৃহস্পতিবার এ উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে আমচাষিদের নিবন্ধন শুরু হয়েছে।

‘ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের বাণিজ্যিকীকরণের চ্যালেঞ্জসমূহ উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ৪০ জন চাষি নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেন।

আরও পড়ুন

ক্ষীরশাপাতি চাঁপাইনবাবগঞ্জের অত্যন্ত সুস্বাদু আম। বর্তমানে দেশের মোট উৎপাদিত আমের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ ক্ষীরশাপাতি জাতের। এ জাতের আম প্রতিবছর রপ্তানি হওয়া আমের তালিকার শীর্ষে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বর্তমানে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের আম রপ্তানি হচ্ছে। ক্ষীরশাপাতি আমের বিপুল সম্ভাবনা বিবেচনা করে এর জিআই নিবন্ধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বিশ্ববাজারে এটি ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জের ক্ষীরশাপাতি আম’ নামে পরিচিতি পাবে। ২০১৯ সালে এটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের জিআই পণ্য হিসেবে সরকার তালিকাভুক্ত করে।

শিবগঞ্জে আয়োজিত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরের রেজিস্ট্রার মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে নিবন্ধিত ক্ষীরশাপাতি আমচাষিদের জিআই ট্যাগ দেওয়া হবে। তাঁদের উৎপাদিত ক্ষীরশাপাতি আমে এই জিআই ট্যাগ লাগাতে পারবেন। এতে ভোক্তাদের যেমন চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বেছে নিতে সুবিধা হবে। অন্যদিকে চাষিরাও ভালো দাম পাবেন। এ আম রপ্তানিতেও নিবন্ধিত চাষিরা সুবিধা পাবেন। উত্তম কৃষি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে চাষিদের এ আম উৎপাদনের আহ্বান জানান তিনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের বাণিজ্যিকীকরণের চ্যালেঞ্জ উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক সেমিনারে অতিথিরা। আজ দুপুরে শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে
ছবি: প্রথম আলো

মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, নিবন্ধন করতে চাষিদের ঢাকায় গিয়ে আবেদন করতে হতো। এতে তাঁদের অতিরিক্ত টাকা খরচের পাশাপাশি সময় ব্যয় হতো। তাঁদের কষ্ট লাঘবে সেবাগ্রহীতাদের দ্বারে এসেছেন তাঁরা। চাঁপাইনবাবগঞ্জের ল্যাংড়া ও আশ্বিনা আমও শিগগিরই জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।

শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হায়াতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে অধিদপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার জিল্লুর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের (আম গবেষণা কেন্দ্র) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম, শিবগঞ্জ ম্যাঙ্গো প্রডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান, শিবগঞ্জ ম্যাঙ্গো ফাউন্ডেশনের সভাপতি আহসান হাবিব প্রমুখ বক্তব্য দেন।

আরও পড়ুন

শিবগঞ্জ ম্যাঙ্গো প্রডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৯ সালে ক্ষীরশাপাতি আম জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও এখন পর্যন্ত তার সুফল চাষি ও ব্যবসায়ীরা পাননি। নিবন্ধন ও জিআই ট্যাগ ব্যবহারের সুযোগ পেলে চাষিরা লাভবান হবেন। তবে গ্লোবাল সনদও পেতে হবে। তখন ক্ষীরশাপাতি আন্তর্জাতিক বাজারে স্থান পেতে আর বাধা থাকবে না। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে কাজ করতে হবে।