দেশে চীনের করোনার ধরন পাওয়া গেলেও ভয়ানক নয়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

মানিকগঞ্জে বিজয় মেলা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলা শহরের সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে
ছবি: প্রথম আলো

দেশে করোনাভাইরাসের চীনের ধরন শনাক্ত হলেও তা ভয়ানক নয় বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, তেমন ক্ষতিকারক না হলেও করোনার নতুন ধরনটি যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জ শহরে সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে বিজয় মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

জাহিদ মালেক বলেন, দেশে যখন করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়েছিল, তখন বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিরাই করোনাভাইরাস নিয়ে এসেছিলেন। এখনো সেই আশঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে সতর্কতা রয়েছে, দুশ্চিন্তার কারণ নেই। চীনে করোনার যে ধরন দেখা দিয়েছে, বাংলাদেশেও সেই ধরন পাওয়া গেছে। তবে তা যেন না ছড়ায় এ জন্য সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। চীনের করোনার নতুন ধরন খুব বেশি ক্ষতিকর ও ভয়ানক নয়। এই ধরনের সংক্রমণের ক্ষমতা বেশি, তবে মৃত্যুর হার বেশি নয়।

যুক্তরাষ্ট্রসহ আশপাশের দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যেসব দেশ করোনার টিকা দিতে ও সতর্ক হতে পরামর্শ দিচ্ছে, সেসব দেশের হাসপাতালগুলোতে ৫০ ভাগ শয্যাও খালি নেই। চীন থেকে যেসব ব্যক্তি দেশে আসছেন, তাঁদের নমুনা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। চীনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে যাঁরা বাংলাদেশে আসছেন, তাঁদের বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও স্থলপথে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে জানান, দেশে হাসপাতালগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুই দিন আগে ও গতকাল (বুধবার) চীন থেকে যাঁরা দেশে এসেছেন, তাঁদের পরীক্ষা করে কয়েকজনের মধ্যে করোনার সংক্রমণ পাওয়া গেছে। তবে তাঁরা কী ধরনের করোনায় আক্রান্ত, তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। তাঁদের নমুনা পরীক্ষার জন্য আইসিডিডিআরবির পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। দু–এক দিনের মধ্যে ফলাফল জানা যাবে। চীনের আটজনকে হাসপাতালের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। তাঁরা করোনামুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আইসোলেশনে থাকবেন।

করোনা ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে টিকা নেওয়া ও মাস্ক ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রায় করোনামুক্ত। দেশে প্রায় ৯৮ ভাগ মানুষ ভ্যাকসিন নিয়েছেন। বুস্টার ডোজও নিয়েছেন। কিন্তু করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এখনো পুরোপুরি চলে যায়নি। বিভিন্ন দেশে করোনার সংক্রমণ বেড়েছে। যেখানে জনসমাগম বেশি, সেখানে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। যেকোনো জিনিস ছোট থেকে বড় হয়ে যায়। কাজেই সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

বিজয় মেলা উদ্‌যাপন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহীউদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালামের সঞ্চালনায় মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আবদুল লতিফ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান, মানিকগঞ্জ পৌর মেয়র রমজান আলী, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মমিন উদ্দিন খান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) জেলা কমিটির সভাপতি আবুল ইসলাম শিকদার, জেলা জাসদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন খান প্রমুখ।