তিন জেলা থেকে আনসার আল ইসলামের পাঁচ সদস্য আটক

খুলনা জেলার মানচিত্র

খুলনা, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জে গতকাল বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের পাঁচ সদস্যকে আটক করেছে খুলনা র‍্যাব-৬। রাষ্ট্রীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাঁদের আটক করা হয়।

আটক পাঁচজন হলেন মো. তরিকুল ইসলাম, মো. আকাশ ওরফে আবদুল্লাহ, তাজিমুদ্দিন ওরফে জসীম উদ্দীন, ইসমাইল হাসান অনিক ও মো. রিপন। তাঁরা পিরোজপুর, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। তাঁদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের উগ্রবাদী বই, সংগঠনের সদস্যদের তালিকা এবং কে, কোথায়, কীভাবে কাজ করেন, তার বিবরণসংবলিত একটি টালি খাতা জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বয়স ২০ থেকে ২৩ বছরের মধ্যে।

আজ বৃহস্পতিবার র‍্যাব-৬–এর কার্যালয়ে প্রেসব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়। এ সময় র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আটক ব্যক্তিরা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’–এর সদস্য। তাঁরা আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থানে উদ্বুদ্ধ হয়ে এবং বিভিন্ন উগ্রবাদী বই ও ভিডিও দেখে জঙ্গি কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়েন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, তরিকুল গোপালগঞ্জের একটি মসজিদে ইমামতি করতেন। ২০২১ সালে তিনি ওমর নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে ‘আনসার আল ইসলামের’ সদস্য হন। পরে তাঁর মাধ্যমে অন্যরা ওই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হন। ওই সদস্যরা খুলনা, বাগেরহাট ও গোপালগঞ্জ এলাকায় সংগঠনের সদস্য সংগ্রহের জন্য দাওয়াতি কাজ করতেন। পাশাপাশি সংগঠন পরিচালনা ও শক্তিশালী করতে অর্থ সংগ্রহ করতেন তাঁরা।

এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আল মঈন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ আটক ব্যক্তিরা ওমর নামের যাঁর কথা বলেছেন, তাঁর খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি। তবে তাঁকে শনাক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। ওমরকে যদি আইনের আওতায় আনা যায়, তাহলে আরও বেশি চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যেতে পারে। এসব জঙ্গি সংগঠন সাধারণত ‘কাট অফ’ পদ্ধতিতে কার্যক্রম পরিচালনা করে। এ কারণে সংগঠনের ঊর্ধ্বতন নেতাদের ব্যাপারে খুব বেশি তথ্য পাওয়া যায় না।

খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, ২০১৩ সালে ‘আনসার আল বাংলা টিম’ নামের একটি জঙ্গি সংগঠনের উত্থান হয়। ওই সংগঠন সারা দেশের ১৩ জন মুক্তমনা ব্যক্তিকে হত্যা করে। গোয়েন্দারা ওই সংগঠনের সদস্যদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়। পরে ২০১৫ সালে ‘আনসার আল বাংলা টিম’ নতুন করে ‘আনসার আল ইসলাম’ নামের সংগঠনে রূপ নেয়। ২০২১ সাল থেকে ওই সংগঠন খুলনা, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জসহ দক্ষিণ অঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় কার্যক্রম শুরু করেছে। ওই সংগঠন দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ সংগঠনকে অস্ত্র কেনা ও প্রশিক্ষণের কাজে সহযোগিতা করার জন্য ২ ধাপে ৬৫ লাখ টাকা দিয়েছে।