কুষ্টিয়ায় আদালত থেকে বাড়ি ফেরার পথে যুবককে কুপিয়ে জখম
কুষ্টিয়ায় একটি মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে এক যুবকের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ রোববার বেলা একটার দিকে সদর উপজেলার দূর্বাচারা রাজ্জাক মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়।
আহত যুবকের নাম আসিকুজ্জামান শুভ (৩৩)। তিনি সদর উপজেলার উজানগ্রাম ইউনিয়নের দূর্বাচারা রাজ্জাক মোড় এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাকিমের ছেলে। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একটি মামলার হাজিরা দিয়ে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন আসিকুজ্জামান। দূর্বাচারা এলাকায় রাজ্জাক মোড়ে পৌঁছালে সেখানে কয়েক যুবক তাঁর মোটরসাইকেলের গতিরোধ করেন। মোটরসাইকেল থামানোর সঙ্গে সঙ্গে তাঁর ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালান।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আসিকুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘কিছু বুঝে ওঠার আগেই ১৫ থেকে ২০ জন ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে অতর্কিত তাঁর ওপর হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপাতে থাকে। একপর্যায়ে তিনি চিৎকার দিলে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।’ হামলাকারীরা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ছানোয়ার হোসেন মোল্লার লোকজন বলে তিনি দাবি করেন।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাপস কুমার সরকার প্রথম আলোকে বলেন, আহত যুবকের হাত ও পায়ে ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। তা ছাড়া ওই যুবকের শরীরে আরও কয়েক স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে। এ কারণে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উজানগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ছানোয়ার হোসেন মোল্লার সঙ্গে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীর কবিরের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এই দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে কয়েক দফায় সংঘর্ষ, বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে। পাল্টাপাল্টি মামলায় আসামি করা হয়েছে দুই পক্ষের সমর্থকদের। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা চলছে।
আসিকুজ্জামানের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগের বিষয়ে জানতে উজানগ্রাম ইউপির চেয়ারম্যান ছানোয়ার হোসেন মোল্লার মুঠোফোনে আজ একাধিকবার কল করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন না ধরে কেটে দেন। এ জন্য তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘এ হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে ইউপির চেয়ারম্যান ছানোয়ার হোসেন মোল্লাসহ তার কয়েক অনুসারী। তারাই এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি করছে।’
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশিদ বলেন, প্রতিপক্ষের হামলায় এক যুবক আহত হয়েছেন। তাঁকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মামলা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান চলছে।