‘সরকারি চাকরি ও শুল্কমুক্ত গাড়ি কিনে দেওয়ার’ প্রলোভন দেখাতেন ভুয়া সচিব

ভোলার লালমোহন থেকে এই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে সোমবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে জানায় পটুয়াখালী সদর থানার পুলিশছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালীতে জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পরিচয়ে সরকারি চাকরি দেওয়া ও শুল্কমুক্ত গাড়ি কিনে দেওয়ার কথা বলে প্রতারণার অভিযোগে তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার রাতে ভোলার লালমোহন থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে গতকাল সোমবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে জানায় পটুয়াখালী সদর থানার পুলিশ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পরিচয় দেওয়া সাইফুল ইসলাম ওরফে মো. ইমাম শাহজাদা (৫০), তাঁর সহযোগী মো. জসিম হাওলাদার (৩৫) ও মো. আলমগীর হাওলাদার (৪৩)।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, পটুয়াখালীর লেবুখালী এলাকার বাসিন্দা ও পরিবহন ব্যবসায়ী মো. শাকুর হাওলাদারের সঙ্গে ছয় মাস আগে সাইফুল ইসলামের পরিচয় হয়। তিনি নিজের নাম মো. ইমাম শাহজাদা জানিয়ে নিজেকে জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব হিসেবে পরিচয় দেন। ঢাকায় সচিবালয়ে কর্মরত আছেন জানিয়ে শাকুর হাওলাদারকে একটি ভিজিটিং কার্ড দেন তিনি। এরপর কলাপাড়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শন করতে যাচ্ছেন বলে জানান।

পুলিশ জানায়, মুঠোফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সুবাদে সাইফুল ইসলাম শাকুর হাওলাদারের স্ত্রী ও ভাইয়ের স্ত্রীকে সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়া ও শুল্কমুক্ত প্রাইভেট কার কিনে দেওয়ার কথা বলেন। এ জন্য ২৮ লাখ টাকা চান তিনি। শাকুর হাওলাদার রাজি হয়ে পর্যায়ক্রমে ব্যাংক ও বিকাশের মাধ্যমে ২৬ লাখ ৫৭ হাজার ২৮০ টাকা দেন। পরবর্তী সময়ে কয়েকবার গাড়ি ও চাকরির কথা বললে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন সাইফুল। একপর্যায়ে গালিগালাজসহ হুমকি দেন তিনি। এ ঘটনায় ২৪ ফেব্রুয়ারি পটুয়াখালী সদর থানায় বাদী হয়ে একটি মামলা করেন শাকুর হাওলাদার।

মামলার পর পুলিশের একটি দল তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে রোববার রাতে ভোলার লালমোহন উপজেলার গজারিয়া থেকে সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। পরে রাতেই সাইফুলের সহযোগী মো. জসিম হাওলাদার ও মো. আলমগীর হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে পুলিশ নগদ ৪০ হাজার ৫০০ টাকা, একটি পাসপোর্ট, একটি ব্যাংকের চেকবই এবং প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত একাধিক মোবাইল সিম উদ্ধার করে বলে জানায়।

পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম বলেন, প্রতারক এই চক্রটির ঠিকানা ভোলার লালমোহনের গজারিয়ায়। তাঁদের বিরুদ্ধে আগেও প্রতারণার মামলা হয়েছিল। গ্রেপ্তার অপর দুজন সাইফুল ইসলামকে অপরাধমূলক কাজে সহযোগিতা করতেন। তিনি মামলা–মোকদ্দমায় পড়লে জামিন করাতেন এই দুজন।