সিলেটে কমছে নদ-নদীর পানি, আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরছেন বাসিন্দারা

সিলেটের সুরমা নদীর পানি কমছে। প্লাবিত এলাকাগুলো থেকে নদীর পানি নামছে। নগরের কদমতলী এলাকায়ছবি: আনিস মাহমুদ

সিলেটে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং অতিবৃষ্টির ফলে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। উপজেলা পর্যায়ে এবং সিলেট নগরে বন্যার পানির কারণে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া বাসিন্দারা বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন।

সিলেটের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টির পরিমাণ কম। সিলেটে বৃষ্টির পরিমাণ কমে আসায় নদ-নদীর পানিও কমছে। তবে পানি কিছুটা ধীরগতিতে নামছে। এতে আগের তুলনায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এমন অবস্থা অব্যাহত থাকলে পানি আরও কমে আসবে।

এদিকে সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের ৪২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৮টির মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় ছিলেন। এর মধ্যে গতকাল বুধবার ১৩টি ওয়ার্ডে আংশিক জলাবদ্ধতা ছিল। সিলেট নগরের ২০টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় তিন হাজার বাসিন্দা আশ্রয় নিয়েছিলেন। গতকাল রাতে ও আজ বৃহস্পতিবার সকালে অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়েছেন। তবে আজ বেলা ১১টায় পুরোপুরি কতজন আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন, সেটি জানা যায়নি।

সিলেট সিটি করপোরেশনের গণসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর প্রথম আলোকে বলেন, সিলেটের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় জমে যাওয়া পানি নামছে। বাসিন্দারা ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। তবে সিটি করপোরেশনের আশ্রয়কেন্দ্রগুলো খোলা আছে। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে রান্না করা খাবারসহ শুকনা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। পানি যাতে দ্রুত নেমে যায়, সে জন্য ছড়া-খাল পরিচ্ছন্ন অভিযান চলছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি গতকাল সন্ধ্যা ছয়টার তুলনায় আজ সকাল নয়টায় কমেছে। সিলেটের দুটি নদীর পানি বর্তমানে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে সিলেটের সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি গতকালের তুলনায় কমলেও বিপৎসীমার ওপরে ছিল। নদীর ওই পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার। আজ সকাল ৯টায় ওই পয়েন্টে পানি ১৩ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

নদীর সিলেট পয়েন্টে গতকাল সন্ধ্যায় ১০ দশমিক ৬৯ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আজ সকাল ৯টা থেকে সেটি কমে ১০ দশমিক ৫৪ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ পয়েন্টে পানি গতকাল বিপৎসীমার ওপরে ১৫ দশমিক ৪৮ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আজ সকাল ৯টার হিসাব অনুযায়ী বিপৎসীমা থেকে নেমে ১৫ দশমিক ২৭ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। নদীর ওই পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ১৫ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার।

এ ছাড়া নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ৯ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার। আজ সকাল ৯টায় ওই পয়েন্টে পানি ৯ দশমিক ৯৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ ছাড়া সিলেটের অন্যান্য নদ-নদী লোভা, সারি ও ধলাই নদের পানিও কমছে।

এদিকে সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন জানান, সিলেটে গতকাল সকাল ছয়টা থেকে আজ সকাল ছয়টা পর্যন্ত বৃষ্টির পরিমাণ কমেছে। এ সময়ে মাত্র ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তবে আজ সকাল ছয়টার পর রাত পর্যন্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে।