বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন একটি কারখানার শ্রমিকেরা। আজ শনিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার বক্তারপাড়া এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে পুলিশের আশ্বাসে তাঁরা অবরোধ তুলে নেন।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা সবাই মারস টেক্সটাইল মিল নামের একটি সুতা তৈরির কারখানার। তাঁরা জানান, কারখানাটিতে প্রায় ১ হাজার ২০০ শ্রমিক কর্মরত। কয়েক মাস ধরে এ কারখানা বন্ধের চেষ্টা চলছে। কারণ, এটি পুরোদমে চালাতে প্রায় দুই হাজার শ্রমিক দরকার। কারখানার শ্রমিকদের এক মাসের বেতন পাওনা রয়েছে। বেতন বাকি রেখেই কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে, এ আশঙ্কায় রাস্তায় নেমেছেন।
কারখানাটির রিং বিভাগের ফোরম্যান ইকবাল পারভেজ প্রথম আলোকে বলেন, বেশ কয়েক দিন ধরে কারখানায় উৎপাদন কমিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কাঁচামালও তেমন আনা হচ্ছে না। তিনি খবর নিয়ে জানতে পেরেছেন, কর্তৃপক্ষ কারখানাটি বন্ধ করে দেবে। তাঁদের বেতনসহ অন্য পাওনা এখনো পরিশোধ হয়নি। এর প্রতিবাদে তাঁরা গত বৃহস্পতিবার কারখানার ফটকে বিক্ষোভ করেছিলেন।
রিং বিভাগের শ্রমিক মোজাম্মেল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকালে কারখানায় ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তা, কারখানার মালিক কিংবা পরিচালক কেউ আসেননি। আবার কারখানার ভেতরে খাবারের ক্যানটিনও বন্ধ রয়েছে। তাঁরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন, মালিকপক্ষের কেউ আর আসবেন না। এ কারণে তাঁরা বিক্ষোভ করেছেন।
বাংলাদেশ মেটাল শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মো. আলী প্রথম আলোকে বলেন, তিনি শ্রমিকদের পক্ষে মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। মালিকপক্ষ কারখানাটি চালাতে ব্যর্থ হলে শ্রমিকদের সব পাওনা মিটিয়ে দিয়ে এরপর কারখানা বন্ধ করতে হবে। হঠাৎ করে বিনা নোটিশে কারখানা বন্ধ করা অন্যায়। মালিকপক্ষ শ্রমিকদের দাবি না মানলে আন্দোলন ছাড়া উপায় থাকবে না।
এদিকে শ্রমিকদের এ অবরোধের ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উভয় দিকে অন্তত ৩০ কিলোমিটার যানজট দেখা দেয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করা যাত্রী ও রোগীরা। মহাসড়কে আটকে পড়া প্রকৌশলী সূর্য দাস প্রথম আলোকে বলেন, তিনি তাঁর কর্মস্থল সীতাকুণ্ডের কুমিরা থেকে চট্টগ্রাম নগরের বাসায় ফিরছিলেন। যানজটের কারণে তাঁকে এক ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়েছে।
জানতে চাইলে শিল্প পুলিশ-৩–এর পুলিশ সুপার মো. সোলায়মান প্রথম আলোকে বলেন, মালিকপক্ষের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেওয়ার পর শ্রমিকেরা তাঁদের অবরোধ তুলে নেন। মালিকপক্ষ তাঁকে জানিয়েছে, আগামী সোমবার শ্রমিকদের বেতনসহ যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করা হবে।