চট্টগ্রাম নগরে পুলিশের হেফাজতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অবসরপ্রাপ্ত উপপরিচালক এস এম শহীদুল্লাহর (৬৭) মৃত্যুর ঘটনায় চট্টগ্রাম আদালতের এক বেঞ্চ সহকারীকে বদলি করা হয়েছে। তাঁর নাম হারুন অর রশিদ।
হারুন অর রশিদকে সোমবার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট চতুর্থ থেকে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ক্যাশিয়ার পদে বদলি করা হয়েছে। একই সঙ্গে যে মামলায় দুদক কর্মকর্তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিলে সেটির সমন লুকিয়ে রাখার অভিযোগ উঠায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে এক সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
হারুন অর রশিদকে বদলি করার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন চট্টগ্রামের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, সমন না পাঠিয়ে রেখে দেওয়ার অভিযোগ উঠায় দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্তের জন্য চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. অলি উল্লাহকে প্রধান করে এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে।
আদালতে করা একটি মারামারির মামলায় পরোয়ানা থাকায় ৩ অক্টোবর রাতে নগরের চান্দগাঁওয়ের বাসা থেকে শহীদুল্লাহকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসেন সাদাপোশাকে থাকা পুলিশের দুই সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ইউসুফ আলী ও সোহেল রানা। থানায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরিবারের দাবি, হৃদ্রোগের রোগী শহীদুল্লাহকে পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে ওষুধ না দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, শহীদুল্লাহকে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কক্ষে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। তাঁকে থানায় কোনো নির্যাতন করা হয়নি। ওসির কক্ষে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে পরিবারের সদস্যরা ও পুলিশ মিলে নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মৃত্যুর কারণ হৃদ্রোগ। ঘটনার পর ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়।
শহীদুল্লাহর ছেলে নাফিজ শহীদ প্রথম আলোকে বলেন, মিথ্যা মামলা হলেও সমন পেলে তাঁর বাবা আদালতে হাজির হতেন। বিষয়টি আইনগতভাবে মোকাবিলা করতে পারতেন। কিন্তু এভাবে পুলিশ গ্রেপ্তার করায় তাঁর বাবার এমন মৃত্যু হয়েছে।