কমিটি নেই ১৪ মাস, ছাত্রদলের কার্যক্রম স্থবির নোয়াখালীতে

দীর্ঘ ১৪ মাস ধরে কমিটি নেই নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলের। একইভাবে কমিটি নেই নোয়াখালীর ৯ উপজেলার চারটিতে। বাকি পাঁচ উপজেলায় আহ্বায়ক কমিটি থাকলেও তা মেয়াদোত্তীর্ণ। এমন অবস্থায় নোয়াখালীতে ছাত্রদলের সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২১ আগস্ট নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। ওই কমিটিতে সভাপতি পদে আজগর উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান মো. নোমান ছিলেন। দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। শিগগিরই নতুন কমিটি গঠন করা হবে। তবে ১৪ মাসেও নতুন কমিটি গঠন করা হয়নি।

কমিটি না থাকার কারণে দলের ভেতর জবাবদিহির জায়গাও নষ্ট হচ্ছে। এ সুযোগে কেউ কেউ অনিয়মে জড়িয়ে পড়ছেন, যা সামগ্রিকভাবে দলের জন্য ক্ষতিকর।
সাবেক সহসভাপতি, নোয়াখালী জেলা ছাত্রদল

জেলা ছাত্রদলের একাধিক সাবেক নেতার সঙ্গে প্রথম আলোর কথা হয়। তাঁরা বলেন, কমিটি না থাকায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভেদ বাড়ছে। যে যাঁর মতো দায়সারাভাবে সাংগঠনিক কর্মসূচি পালন করছেন। জেলা শাখার তদারকি না থাকায় অধীন ইউনিটগুলোর কার্যক্রমও ঝিমিয়ে পড়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা ছাত্রদলের সাবেক দুই নেতা বলেন, গত বছর কমিটি বিলুপ্তির পর নতুন কমিটি গঠন হবে—এ আশায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনা দেখা দিয়েছিল। তবে এসব নেতা-কর্মী এখন হতাশ হয়ে পড়েছেন। আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দলের কার্যক্রমে গতি বাড়াতে দ্রুত কমিটি গঠন করা উচিত বলে জানান তাঁরা।

জানতে চাইলে জেলা ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান মো. নোমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল, এটা সত্য। কিন্তু কী কারণে কমিটি হঠাৎ বিলুপ্ত করা হলো, তা আমরা জানি না। তবে দলের স্বার্থে বলব, দ্রুত নতুন কমিটি ঘোষণা করা উচিত। তা না হলে দল সাংগঠনিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

নতুন কমিটিতে পদপ্রত্যাশীদের একজন আনোয়ার হোসাইন। তিনি বিগত কমিটিতে সহসভাপতির পদে ছিলেন। আনোয়ার হোসাইন বলেন, দীর্ঘদিন কমিটি না থাকার কারণে সংঘবদ্ধভাবে দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে। তা ছাড়া কমিটি না থাকার কারণে দলের ভেতর জবাবদিহির জায়গাও নষ্ট হচ্ছে। এ সুযোগে কেউ কেউ অনিয়মে জড়িয়ে পড়ছেন, যা সামগ্রিকভাবে দলের জন্য ক্ষতিকর।

চার উপজেলায় কমিটি নেই, পাঁচটিতে মেয়াদোত্তীর্ণ

জেলার মতো নোয়াখালীর চার উপজেলাতেও ছাত্রদলের কমিটি নেই। এসব উপজেলা হলো চাটখিল, কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট ও সুবর্ণচর। এর বাইরে জেলার বাকি পাঁচ উপজেলার মধ্যে চারটিতে আহ্বায়ক কমিটি থাকলেও সেগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে চার বছর আগে। এসব উপজেলা হলো সদর, বেগমগঞ্জ, সেনবাগ ও সোনাইমুড়ী। এ ছাড়া অপর উপজেলা হাতিয়ায় গত ১২ আগস্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এক মাসের জন্য গঠিত এই আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদও শেষ হয়েছে।

জানতে চাইলে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডাকসুসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে এত দিন আমাদের ব্যস্ততা ছিল। এ কারণে জেলা কমিটিগুলোর দিকে নজর দেওয়া সম্ভব হয়নি। বর্তমানে জেলা কমিটি দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শিগগিরই নোয়াখালীতে নতুন কমিটি দেওয়া হবে।’