মহাসড়কের পাশ ঘেঁষে ২০টি স্থানে বালুর ব্যবসা, দুর্ঘটনার ঝুঁকি

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় অন্তত ২০টি স্থানে মহাসড়ক ঘেঁষে চলছে বালুর ব্যবসা। এতে ওই এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েছে।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশ ঘেঁষে রাখা হয়েছে বালুর স্তুপ। এখান থেকে হয় বেচাকেনা। গতকাল বিকেল সাড়ে চারটার দিকে চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের গয়ালমারা এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

মহাসড়কের পাশে বালুর স্তূপ। সেখানেই চলছে বালু বেচাকেনা। বালু নিতে আসা ট্রাক-পিকআপ ভ্যানের কারণে প্রায়ই যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে মহাসড়কে। গতকাল সোমবার এমনই চিত্র দেখা যায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার হারবাংয়ের গয়ালমারা অংশে।

শুধু গয়ালমারা নয়, কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় অন্তত ২০টি স্থানে মহাসড়ক ঘেঁষে চলছে বালুর ব্যবসা। এতে ওই এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েছে।

চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের গয়ালমারা এলাকায় মহাসড়কের পাশে বালুর ব্যবসা করছেন নাজিম উদ্দিন নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি। জানতে চাইলে নাজিম উদ্দীন বলেন, নিলামে এসব বালু তিনি কিনেছেন। বিক্রির সুবিধার জন্য মহাসড়কের পাশে রেখেছেন। এর বাইরে খোঁজাখুঁজি করেও আর কোনো সুবিধাজনক স্থানের সন্ধান পাননি।

মহাসড়কের কয়েকটি স্থানে এমনভাবে বালু স্তূপ করে রাখা হয়েছে, মহাসড়কের অন্য পাশ থেকে গাড়ি এলে দেখাও যায় না। গত পাঁচ মাসে অন্তত তিনটি দুর্ঘটনা ঘটেছে এই বালু ব্যবসার কারণে।
মেহেদী হাসান, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, মালুমঘাট হাইওয়ে থানা

সরেজমিনে গয়ালমারা ছাড়াও উপজেলার বরইতলী, ফাঁসিয়াখালী, ডুলাহাজারা ও খুটাখালী এলাকায় মহাসড়কের দুই পাশে বালুর ব্যবসা করতে দেখা যায়। এ সময় স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, বালুর স্তূপ থেকে হুট করেই হঠাৎ মহাসড়কে গাড়ি উঠে যায়। এতে মহাসড়কে কখনো কখনো যানজট তৈরি হয়। মহাসড়কের পাশ দিয়ে হাঁটতে স্থানীয় বাসিন্দারাও ভোগান্তিতে পড়েন।

খুটাখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বলেন, এভাবে সড়কের পাশে বালুর ব্যবসা করায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে; কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

চকরিয়া উপজেলার মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, ‘মহাসড়কের কয়েকটি স্থানে এমনভাবে বালুর স্তূপ রাখা হয়েছে মহাসড়কের অন্য পাশ থেকে গাড়ি এলে দেখাও যায় না। গত পাঁচ মাসে অন্তত তিনটি দুর্ঘটনা ঘটেছে এই বালু ব্যবসার কারণে। যাঁরা বালুর ব্যবসা করছে আমরা অনেকবার তাঁদের নিষেধ করেছি; কিন্তু তাঁরা বিষয়টি আমলে নিচ্ছেন না।’

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) চকরিয়া উপজেলার সভাপতি সোহেল মাহমুদ বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক তুলনামূলক সরু। যানবাহনের চাপ সব সময় থাকে। মহাসড়কের চকরিয়া অংশে বেশ কিছু বাঁক রয়েছে, যেখানে দুর্ঘটনা বেশি হয়। বালুর ব্যবসার কারণে এখন ঝুঁকি আরও বেড়ে গেছে। এভাবে মহাসড়কের পাশে বালুর স্তূপ রাখা কিছুতেই কাম্য নয়।

জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রূপায়ণ দেব বলেন, ‘মহাসড়কের পাশে বালু রেখে ব্যবসা করা অবশ্যই গর্হিত কাজ। সড়ক ও জনপথ বিভাগ তা সরানোর উদ্যোগ নিলে উপজেলা প্রশাসন অবশ্যই সঙ্গে থাকবে।’

কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন খালেদ চৌধুরী বলেন, বালু ব্যবসায়ীদের মৌখিক ও লিখিতভাবে সতর্ক করা হলেও তাঁরা সরে যাচ্ছেন না। শিগগিরই এসব বালুর স্তূপ উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।