ঘুম থেকে জেগেই আহত সাবিনা জানতে চাইছেন স্বামীর কথা, জানানো হয়নি মৃত্যুর খবর

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ওসমানীনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সোহেল ভূঁইয়াছবি: সংগৃহীত

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চতুর্থ তলা। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর থেকে সেখানে বেশির ভাগ সময় ঘুমের ঘোরেই আছেন সাবিনা আক্তার (৩৪)। ঘুম ভাঙলেই বারবার জিজ্ঞেস করছেন শুধু স্বামী ও সন্তানের কথা। কিন্তু গতকাল রোববারের দুর্ঘটনায় তাঁর স্বামী সোহেল ভূঁইয়া আগেই মারা গেছেন। আজ সোমবার বিকেল পর্যন্ত এ খবর তাঁকে জানানো হয়নি।

ওই দুর্ঘটনায় আহত হয়ে একই হাসপাতালে চিকিৎসা নেয় সাবিনার সন্তান তোহা (৫) ও সোহা (৩)। এর মধ্যে সোহা কিছুটা সুস্থ থাকায় গতকাল রাতেই তাকে স্বজনেরা বাড়ি নিয়ে গেছেন। আজ বিকেল পর্যন্ত হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন আছেন সাবিনা ও তাঁর মেজ মেয়ে তোহা। গতকাল রাতে মা ও মেয়ের অস্ত্রোপচার হয়েছে। বর্তমানে দুজনই শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

আরও পড়ুন

সাবিনার স্বজনেরা জানান, আহত হওয়ার পর থেকে ঘুমের ঘোরেই আছেন সাবিনা। ঘুম ভাঙলে বারবার স্বামী ও সন্তানের কথা জিজ্ঞেস করছেন। তাঁদের পাশে যেতে চাচ্ছেন। স্বজনেরা সোহেলের মৃত্যুর খবর স্ত্রী সাবিনাকে জানাননি। তাঁকে বলা হয়েছে, সোহেলকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়েছে ও সুস্থ আছেন। তাঁর সন্তানেরাও সুস্থ আছেন বলে জানানো হয়েছে। এতে কিছুটা আশ্বস্ত হয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়ছেন সাবিনা।

গতকাল সকালে সিলেটের ওসমানীনগরে প্রাইভেট কারের সঙ্গে ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে সাবিনা মাথা ও বুকে আঘাত পেয়েছেন বলে জানান তাঁর চাচাশ্বশুর জাহিদ হাসান। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকেরা সাবিনাকে এখনই খবরটি জানাতে নিষেধ করেছেন। এ জন্যই সময় নেওয়া হচ্ছে।’

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী জানান, ওই দুর্ঘটনায় আহত সাতজনকে গতকাল সকালে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে দুজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় পাঁচজনকে। পাঁচজনের মধ্যে দুটি শিশুর শারীরিক অবস্থা উন্নতি হওয়ায় পরিবারের জিম্মায় তাদের নিয়ে গেছেন। আহত তিনজনের মধ্যে একজন পুরুষ ছিলেন। তাঁকে পরিবারের সদস্যেরা ঢাকায় নিয়ে গেছেন। আহত মা-মেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।

গতকাল সকালে সিলেট থেকে ঢাকাগামী পাথরবোঝাই ট্রাকের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ থেকে সিলেটগামী একটি প্রাইভেট কারের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় প্রাইভেট কারের ৪ যাত্রী নিহত হন। সেই সঙ্গে আহত হন আরও পাঁচজন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়া এলাকার মোছা. সায়মা আক্তার (৩৫), তাঁর ছেলে আয়ান (৬), বোন শামীমা ইয়াসমিন (৩৮) ও তাঁদের খালাতো বোনের স্বামী সোহেল ভূঁইয়া (৩৮)। সোহেল ভূঁইয়া নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের মোগড়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

আরও পড়ুন