নরসিংদীতে ঘুমন্ত স্ত্রী-সন্তানসহ ছয়জনের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন, গ্রেপ্তার ১
নরসিংদীতে পারিবারিক কলহের জেরে ঘুমন্ত স্ত্রী-সন্তানসহ ছয়জনের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত ফরিদ মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাত ৮টার দিকে রায়পুরা থানার বারৈচা এলাকায় স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এর আগে গত বুধবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে নরসিংদী সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের ঘোড়াদিয়া এলাকায় পেট্রল ঢেলে আগুন ধরানোর ঘটনা ঘটে। পরে গত শুক্রবার রাতে ফরিদ মিয়াকে একমাত্র আসামি করে নরসিংদী মডেল থানায় মামলা করা হয়।
পেশায় পিকআপচালক ফরিদ মিয়া (৪৪) ঘোড়াদিয়া এলাকার বাসিন্দা। অগ্নিদগ্ধ ছয়জন হলেন, ফরিদ মিয়ার স্ত্রী রিনা বেগম (৩৮), তাঁদের দুই ছেলে আরাফাত (১৫) ও তাওহীদ (৭), শ্যালিকা সালমা বেগম (৩৪), তাঁর ছেলে ফরহাদ (১২) এবং জিহাদ মিয়া (২৪)। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনকে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ সূত্র বলছে, ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত ফরিদ মিয়াকে গ্রেপ্তারে পুলিশ, র্যাব ও জেলা গোয়েন্দা শাখার একাধিক টিমের অভিযান চলছিল। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল রাত ৮টার দিকে নরসিংদী মডেল থানার একটি টিম রায়পুরার বারৈচা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ফরিদ মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁকে নরসিংদী মডেল থানায় নেওয়া হয়।
নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমদাদুল হক বলেন, আসামি ফরিদ মিয়া দীর্ঘদিন ধরে মাদকে আসক্ত এবং সেদিনও তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিলেন। এর আগেও তাঁর বিরুদ্ধে মাদকের মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। তাঁকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ফরিদ মিয়া ও রিনা বেগম দম্পতির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই পারিবারিক কলহ চলছিল। এ জন্য দুই সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান রিনা। বুধবার রাত আড়াইটার দিকে ফরিদ মিয়া শ্বশুরবাড়ি গিয়ে ঘুমিয়ে থাকা স্ত্রী-সন্তানদের গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। পরে ঘরের বাইরে থেকে দরজায় তালা দিয়ে পালিয়ে যান।
এ সময় প্রতিবেশী ও স্থানীয় লোকজন টিনের ঘরের দরজা ভেঙে দগ্ধ ছয়জনকে উদ্ধার করেন। পরে তাঁরা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের সহায়তায় দগ্ধ ছয়জনকে নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁদের মধ্যে পাঁচজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।