জামালপুরে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ক্যাম্প ও কর্মীর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর

চেয়ারম্যান প্রার্থী হাফিজুর রহমানের নির্বাচনী ক্যাম্পে ভাঙচুর করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে জামালপুর সদর উপজেলার দিগপাইত ইউনিয়নের হবদেশ এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

জামালপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান ওরফে স্বপনের দুটি প্রচারকেন্দ্রে (ক্যাম্পে), তাঁর এক কর্মীর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ও অপর কর্মীর বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গতকাল বুধবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টার মধ্যে সদর উপজেলার দিগপাইত ইউনিয়নের হবদেশ, রশিদপুর ইউনিয়নের রামনগর, শ্রীপুর ইউনিয়নের বাটিকামারি ও শ্রীপুর ইউনিয়নের কুমারিয়া এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে। এতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই নেতাসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন।

কাপ-পিরিচ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন হাফিজুর রহমান। তিনি অভিযোগ করেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দের (মোটরসাইকেল প্রতীক) কর্মী-সমর্থকেরা এই হামলা চালিয়েছেন।

হামলায় আহত ব্যক্তিরা হলেন সদর উপজেলার দিগপাইত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. আবদুল মালেক (৫০), একই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির (৪০), মো. আনোয়ার হোসেন (৩০), একই এলাকার আবদুল আজিজ (৫০) ও হাবেল আলী (৪৫)। তাঁদের সবার বাড়ি দিগপাইত ইউনিয়নের হবদেশ এলাকায়। তাঁদের মধ্যে হুমায়ুন কবিরকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এসব ঘটনায় গতকাল রাতেই হাফিজুর রহমান থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত ৯টার দিকে হবদেশ এলাকায় কাপ-পিরিচ প্রতীকের একটি প্রচারকেন্দ্রে কর্মী-সমর্থকেরা বসে ছিলেন। এ সময় অর্ধশত মোটরসাইকেলের একটি বহর নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দের কর্মী-সমর্থকেরা ওই কেন্দ্রে হামলা চালান ও ভাঙচুর করেন। এ সময় ওই পাঁচজন আহত হন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে শ্রীপুর ইউনিয়নের কুমারিয়া এলাকায় হাফিজুর রহমানের কর্মী গোলাম রব্বানীর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। এ সময় গোলাম রব্বানীকে মারধরও করা হয়। রশিদপুর ইউনিয়নের রামনগর এলাকায় অপর একটি নির্বাচনী প্রচারকেন্দ্রে ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ছাড়া গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে শ্রীপুর ইউনিয়নের বাটিকামারী এলাকায় কাপ-পিরিচ প্রতীকের সমর্থক ফজর আলীর ঘরবাড়িতে হামলা করা হয়।

নির্বাচনী ক্যাম্পে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে জামালপুর সদর উপজেলার দিগপাইত ইউনিয়নের হবদেশ এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

হাফিজুর রহমান বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ খুব ভালোই ছিল। যখন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বুঝতে পারেন, তাঁদের ভোট কম। তখন সাধারণ ভোটার ও তাঁর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমার একজন সমর্থকের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ও আরেক সমর্থকের ঘরবাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমার কর্মী-সমর্থকদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। অবাধ ‍ও সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে এসব ঘটনার তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করছি।’

এ বিষয়ে জানার জন্য মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী বিজন কুমার চন্দের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবীর প্রথম আলোকে বলেন, এসব ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।