পাবনায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে আহত ২৫, আটক ১৫
পাবনা কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন। আজ দুপুরে বৃহস্পতিবার শহরের কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল, রাবার বুলেট ও শটগানের গুলি ছোড়ে। আন্দোলনকারীরও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় পুলিশ ১৫ জনকে আটক করেছে।
এর আগে পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের রাধানগর ডিগ্রি বটতলা এলাকায় শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আজ বেলা ১১টার দিকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এসে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের প্রধান ফটকে জমায়েত হতে থাকেন। এরপর সেখান থেকে তাঁরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা শহর প্রদক্ষিণ করেন। শিক্ষার্থীদের মিছিলটি আবার এডওয়ার্ড কলেজের দিকে ফিরে যাচ্ছিল। দুপুর ১২টার দিকে ডিগ্রি বটতলা এলাকায় শিক্ষার্থীদের অন্য একটি মিছিলের ওপর ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা হামলার চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে কলেজের প্রধান ফটকে থাকা শিক্ষার্থীরা ডিগ্রি বটতলা এলাকার দিকে যান। সেখানে তিনটি গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষার্থীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তাঁরা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর চড়াও হন এবং পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পালিয়ে যান। পরে শিক্ষার্থীরা দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ডিগ্রি বটতলা থেকে মিছিল নিয়ে জেলা শহরে এসে অবস্থান নেন। বেলা সোয়া একটার দিকে তাঁরা শহরের কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনালে অবস্থান নেন।
এদিকে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের সামনে পাবনা-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। বেলা দুইটার দিকে তাঁরা কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল এলাকায় আসেন। সেখানে শিক্ষার্থীরা একত্র হয়ে জেলা শহরের দিকে আসার চেষ্টা করেন। দুপুর আড়াইটার দিকে পুলিশ-বিজিবি সদস্যরা শিক্ষার্থীদের শহরে প্রবেশে বাধা দেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থী সংঘর্ষ শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করেন। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল, রাবার বুলেট ও শটগানের গুলি ছুড়তে শুরু করে। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে ৭ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২৫ জন আহত হন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকাল থেকে আমরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। শহরে প্রবেশের বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা চলার এক পর্যায়ে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসের শেল, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড ও শটগানের গুলি ছুড়তে বাধ্য হয়েছি।’
মাসুদ আলম আরও বলেন, ‘আমাদের ধারণা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বহিরাগতরা ছিলেন। তারাই সংঘর্ষের সূত্রপাত করেছে। ঘটনাস্থল থেকে ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’