মৌলভীবাজারে কারাভোগের বদলে শর্ত সাপেক্ষে আসামির মুক্ত জীবন

আদালত
প্রতীকী ছবি

মৌলভীবাজারের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিন বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত এক ব্যক্তিকে গাছ রোপণসহ বিভিন্ন শর্তে মুক্ত জীবনের সুযোগ দিয়েছেন। দুটি নাবালক সন্তান থাকায় এবং পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হওয়ায় কারাগারে না পাঠিয়ে তাঁকে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা দুইটার দিকে মৌলভীবাজারের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ আলী আহসান এই রায় প্রদান করেন।

প্রবেশনে মুক্ত ওই ব্যক্তির নাম নুর মিয়া। আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৬ আগস্ট মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিরাজনগরে একটি মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাহমুদ মিয়া নামের একজন বাদী হয়ে নুর মিয়াসহ চারজনকে আসামি করে শ্রীমঙ্গল থানায় মামলা করেন। সাক্ষ্য-প্রমাণে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত নুর মিয়াকে তিন বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। পরে আদালত নুর মিয়ার দুই নাবালক সন্তান থাকা এবং পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে তাঁকে কারাগারে না পাঠিয়ে সংশোধনের সুযোগ প্রদান করেছেন।

আদালতের দেওয়া শর্তগুলো নুর মিয়াকে তিন বছর ধরে পালন করতে হবে। জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখবেন।

‘প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিন্যান্স ১৯৬০’-এর অধীনে নামাজ পড়া, ১০০টি গাছ রোপণ, নতুন করে কোনো অপরাধে জড়িত না হওয়া, মাদক সেবন থেকে বিরত থাকা, শান্তি রক্ষা ও সদাচরণ করা, আদালতের নির্দেশমতো হাজির হওয়া ইত্যাদি শর্তে আদালত তাঁকে মুক্তি দেন। এই শর্তগুলো নুর মিয়াকে তিন বছর ধরে পালন করতে হবে। জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখবেন। প্রবেশন কর্মকর্তা এ বিষয়ে আদালতকে অবহিত করবেন।

এই মামলায় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন এপিপি সাইফুর রহমান এবং আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন মো. মিনহাজ উদ্দিন।

এই রায়ের ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাবেক পিপি এ এস এম আজাদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দেশে এ রকম রায় কম হয়। এ চর্চার প্রয়োজন আছে। এ রকম রায়ে অপরাধীর সংশোধন হওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’