রাজশাহীতে ‘ঘুষের জন্য ফাইল আটকে রাখা’ মাউশির উপপরিচালককে বদলি

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) লোগো

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের রাজশাহী অঞ্চলের উপপরিচালক (ডিডি) আলমগীর কবীরের বিরুদ্ধে ঘুষের টাকা না পেয়ে ৯১টি ফাইল আটকে রাখার প্রমাণ পেয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ রোববার তাঁকে মাউশি থেকে ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে বদলি করা হয়েছে।

মাউশি রাজশাহীতে যোগ দেওয়ার ৫ মাস ২৯ দিনের মাথায় আলমগীর কবীরকে বদলি করা হলো। তাঁর বদলির আদেশে স্বাক্ষর করেছেন উপসচিব মো. মাহবুব আলম। একই আদেশে মাউশির রংপুর অঞ্চল থেকে অধ্যাপক মো. উমর ফারুককে আলমগীর কবীরের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। মাউশির রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয় পরিচালক অধ্যাপক মোহা. আছাদুজ্জামান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

মাউশি রাজশাহীর উপপরিচালক হিসেবে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম যোগ দেন আলমগীর কবীর। তারপর তাঁর বিরুদ্ধে অনিয়ম করে এমপিও দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগের তদন্ত চলাকালে তাঁকে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়। গত বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি সবেতন তিনি পরিচালক হতে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন। কিন্তু পরিচালক হতে পারেননি।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ১৮ নভেম্বর তাঁকে আবার মাউশি রাজশাহীর উপপরিচালক হিসেবে পদায়ন করা হয়। এ নিয়ে ১৯ নভেম্বর প্রথম আলোয় ‘দুর্নীতির অভিযোগে বদলি, সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ পাওয়া কর্মকর্তাই মাউশির রাজশাহীর উপপরিচালক’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

আরও পড়ুন

রাজশাহী মাউশিতে ফেরার পর আলমগীর কবীরের বিরুদ্ধে ঘুষের জন্য ফাইল আটকে রাখার অভিযোগ আসতে শুরু করে। এ বিষয়ে দুদকের হটলাইনে অভিযোগ গেলে দুবার তদন্ত করে দুদক অভিযোগের প্রমাণ পায় এবং সে মোতাবেক কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠায়।

সর্বশেষ গত ৩০ এপ্রিল রাজশাহী মাউশিতে অভিযান চালায় দুদক। তখন দুদক কর্মকর্তারা উপপরিচালক আলমগীরের কাছে ৯১টি ফাইল পেন্ডিং দেখতে পান। তাঁর টেবিলে আটকে থাকা ফাইলগুলো রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন কলেজের শিক্ষকদের নতুন এমপিওভুক্তির আবেদনের। ‘টাকা ছাড়া ফাইল ছাড়েন না ডিডি’—এমন অভিযোগে দুদকের একটি দল ওই দিন তাঁর দপ্তরে অভিযান চালায়। এ নিয়ে প্রথম আলো অনলাইনে ‘ঘুষ না দেওয়ায় মাউশির ডিডি আটকে রেখেছিলেন ৯১ ফাইল, প্রমাণ পেল দুদক’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

আরও পড়ুন

এর আগে ১১ মার্চ আলমগীর কবীরের বিরুদ্ধে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একবার অভিযান চালিয়েছিল দুদক। তখন ১৫১টি ফাইল আটকে রাখার প্রমাণ পেয়েছিল দুদক। এ ব্যাপারে দুদক সদর দপ্তরে একটি প্রতিবেদন পাঠায়। এ নিয়ে ওই দিন ‘রাজশাহী মাউশির উপপরিচালকের দপ্তরে দুদক পেল আটকে রাখা ১৫১ ফাইল’ শিরোনামে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

এ ছাড়া ২৮ মার্চ ফাইল আটকে রাখাসহ সাত অভিযোগে আলমগীর কবীরকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছিলেন মাউশি রাজশাহীর পরিচালক। আলমগীর শোকজের সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। এ ব্যাপারে মাউশির মহাপরিচালক বরাবর প্রতিবেদন পাঠান রাজশাহীর পরিচালক।

আরও পড়ুন