শতবর্ষী পুকুর এখন ভাগাড় 

দ্রুত সংস্কার ও খনন করে পুকুরটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে এনে এর সৌন্দর্যবর্ধনের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। 

মধ্যনগরের মধ্যনগর বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়–লাগোয়া এই পুকুরটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার করা হচ্ছে। এখানে এখন অবাধে ফেলা হচ্ছে ময়লা। গতকাল তোলা
প্রথম আলো

প্রয়োজনীয় সংস্কার ও খনন না করায় সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার মধ্যনগর বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় লাগোয়া শতবর্ষী প্রাচীন সরকারি পুকুরটি এখন ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে এটির বেশির ভাগ স্থানই ভরাট হয়ে গেছে। দ্রুত সংস্কার ও খনন করে পুকুরটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে এনে এর সৌন্দর্যবর্ধনের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। 

মধ্যনগর উপজেলা প্রশাসন, এলাকাবাসী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মধ্যনগর ইউনিয়নের মধ্যনগর বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়-সংলগ্ন এলাকায় শতবর্ষী প্রাচীন ওই পুকুরের অবস্থান। এর আয়তন ১ একর ৯৬ শতক। মধ্যনগর এলাকাটি তৎকালীন গৌরীপুরের জমিদার বীরেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরীর অধীনে ছিল। ১৯১৫ সালের দিকে এলাকাবাসীর খাওয়ার পানির চাহিদা মেটাতে এটি খনন করা হয়।

মধ্যনগর বাজার উন্নয়ন কমিটির পক্ষ থেকে পুকুরটি দুই-তিনবার সংস্কার করা হয়। তবে ৩০ থেকে ৩৫ বছর ধরে পুকুরটি সংরক্ষণে আর কারও নজর নেই। পুকুরটির কিছু জায়গা স্থানীয় লোকজনের অবৈধ দখলে ছিল। তিন বছর আগে ধর্মপাশা উপজেলা প্রশাসন পুকুরটিতে দখলে থাকা অবৈধ দখলদারদের সেখান থেকে উচ্ছেদ করে। 

সরেজমিনে গতকাল শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে গিয়ে দেখা যায়, পুকুরটি উত্তর পাশে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। চারদিকে বসতবাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এটি সংস্কার না করায় পুকুরটিতে কচুগাছ ও আগাছায় ভরে গেছে। 

মধ্যনগর ইউনিয়নের মধ্যনগর বাজারের বাসিন্দা আলা উদ্দিন বলেন, ধর্মপাশা উপজেলা প্রশাসন তিন বছর আগে এই পুকুর থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করলেও এটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা ও সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। দ্রুত এটি খনন ও সংস্কার করার জোর দাবি জানান তিনি। 

উপজেলার চামরদানী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলমগীর খসরু বলেন, ‘মধ্যনগর বাজারের শতবর্ষী প্রাচীন পুকুরটি রক্ষায় এর সংস্কার ও খনন একান্ত প্রয়োজন। আগামী উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় আমি বিষয়টি উত্থাপন করব।’ 

মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের রৌহা গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম বলেন, পুকুরটি বয়স শত বছর পেরিয়ে গেছে। এর পানি একসময় এলাকাবাসী পান করতেন। কিন্তু ৩০ থেকে ৩৫ বছর ধরে পুকুরটি সংস্কার ও খনন না করায় বেশির ভাগ স্থানই এখন ভরাট হয়ে গেছে। মধ্যনগরের নানা ইতিহাসের সাক্ষী এই পুকুর। তাই এই প্রাচীন পুকুরের খনন ও সংস্কার করা অত্যন্ত জরুরি। 

 মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ধর্মপাশার ইউএনও শীতেষ চন্দ্র সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি দ্রুত পুকুরটি পরিদর্শন করব। প্রাচীন এই শতবর্ষী পুকুর রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’