চাকরিতে থেকেও তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নজরুল ইসলামছবি: সংগৃহীত

বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী পদে কর্মরত থেকেও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার নজরুল ইসলাম। যদিও ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, চাকরিতে নিয়োজিত কেউ ছাত্রলীগের পদধারী হতে পারবেন না। ছাত্রলীগ নেতা নজরুলের বিরুদ্ধে পদ নেওয়ার সময় চাকরি করার তথ্য গোপন করার অভিযোগ উঠেছে।

নজরুল ইসলাম উপজেলার হাতিয়া ভবেশ আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের অফিস সহকারী পদে কর্মরত। বিদ্যালয়ের কর্মচারী হিসেবে তিনি নিয়মিত বেতন–ভাতা নিচ্ছেন বলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাইদুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।

ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের ৫ (গ) ধারায় বলা হয়েছে, ‘যেকোনো নিয়মিত শিক্ষার্থী (৫-এর ক উপধারা অনুযায়ী) ছাত্রলীগের কর্মকর্তা ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সদস্য হতে পারে। বিবাহিত, ব্যবসায়ী ও চাকরিতে নিয়োজিত কোনো ছাত্রছাত্রী ছাত্রলীগের কর্মকর্তা হতে পারবে না।’

কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর নজরুল ইসলামকে সভাপতি ও মঈনুর রশিদ ওরফে নোমানকে সাধারণ সম্পাদক করে উলিপুর উপজেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। তখন হাতিয়া ভবেশ আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ে অফিস সহকারী পদে চাকরি করছিলেন নজরুল। কিন্তু চাকরির তথ্য গোপন করে তিনি সভাপতির দায়িত্ব নেন। নজরুলের নেতৃত্বাধীন এক বছর মেয়াদি ওই কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনি। তাঁদের সাংগঠনিক কার্যক্রমও স্থবির।

হাতিয়া ভবেশ আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাইদুল ইসলাম ছাত্রলীগ নেতা নজরুল ইসলামের চাকরি ও বেতন–ভাতা নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও তাঁর নিয়োগ ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিয়ে কোনো তথ্য দেননি। বিদ্যালয় সূত্র জানায়, নজরুল ২০২২ সালে অফিস সহকারী পদে নিয়োগ পান।

উলিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন বলেন, ছাত্রলীগের সভাপতি বিদ্যালয়ে কর্মরত বলে সম্প্রতি জেনেছেন। তিনি চাকরির বিষয়টি গোপন রেখে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাঁর ছাত্রলীগের পদে থাকার অধিকার নেই।

অভিযোগের বিষয়ে নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি এই মুহূর্তে কিছু বলতে চাইছি না। আপনার সঙ্গে সাক্ষাতে বিস্তারিত কথা হবে।’ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মঈনুর রশিদ বলেন, কয়েক দিন আগে সভাপতির বিরুদ্ধে চাকরি করার অভিযোগ শুনেছিলেন। তবে তিনি নিশ্চিত নন। এ বিষয়ে এখনো তাঁর (নজরুল) সঙ্গে কথা হয়নি।

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, চাকরিরত কেউ ছাত্রলীগ করতে পারেন না। এটা গঠনতন্ত্রবিরোধী। নজরুলের বিষয়টি তাঁর জানা নেই। চাকরিতে থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।