সিলেটে পাঁচ দফা দাবিতে পরিবহনশ্রমিকদের কর্মবিরতির ডাক

সিলেট জেলার মানচিত্র

সিলেট জেলায় ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি বন্ধসহ পাঁচ দফা দাবিতে আগামী মঙ্গলবার ভোর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষণা দিয়েছেন পরিবহনশ্রমিকনেতারা।

রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরের দক্ষিণ সুরমার বাবনা এলাকার সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের এ সভায় জানানো পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার ও উপকমিশনারকে (ট্রাফিক) অপসারণ এবং ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি, রেকার-বাণিজ্য ও মাত্রাতিরিক্ত জরিমানা বন্ধ করা, সিলেটে শ্রমিক লীগের নাম ব্যবহার করে প্রভাব খাটানো শ্রম আদালতের প্রতিনিধি নাজমুল আলম ওরফে রোমেনকে প্রত্যাহার করা, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়া, ভাঙাচোরা সড়ক দ্রুত সংস্কার, নতুন সিএনজিচালিত অটোরিকশা বিক্রি বন্ধ ও বিক্রি করা গাড়ির রেজিস্ট্রেশন দেওয়া।

এ ছাড়া ‘বেআইনি’ গাড়ি অটোবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ডাম্পিং করা যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছেন পরিবহনশ্রমিকনেতারা।

বক্তারা বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে তাঁদের পাঁচ দফা দাবি-সংবলিত স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে স্মারকলিপির অনুলিপি সিলেটের প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সব শাখায় পাঠানো হয়েছে। একই দাবিতে সিলেটের হুমায়ূন রশীদ চত্বরে মানববন্ধন পালন করেছেন শ্রমিকেরা। এরপরও দাবি মেনে না নেওয়ায় কর্মবিরতির ঘোষণা দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

মঙ্গলবার ভোর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য জেলার পরিবহনশ্রমিকেরা কর্মবিরতি পালন করবেন জানিয়ে বক্তারা বলেন, ওই দিন থেকে জেলার সড়কে কোনো যানবাহন বের হবে না। দাবি মেনে না নেওয়া হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ময়নুল ইসলাম সভায় সভাপতিত্ব ও সাধারণ সম্পাদক মো. জাকারিয়া আহমদ সঞ্চালনা করেন।

বক্তব্য দেন সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি দিলু মিয়া, সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মুহিম, ইমা লেগুনা হিউম্যানহলার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রনু মিয়া, সিলেট জেলা অটোটেম্পো অটোরিকশা শ্রমিক জোটের সভাপতি আবদুল হালিম ভাসানী, সিলেট জেলা ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মনির মিয়া, সিলেট জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আজাদ মিয়া, সিলেট জেলা ট্রাক কাভার্ড ভ্যান পিকআপ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল গফুর, পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আকবর প্রমুখ।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) বি এম আশরাফ উল্যাহ বলেন, ২০১৮ সালে করা আইনে জরিমানার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। বর্তমান আইন অনুযায়ী জরিমানা দিতে গিয়ে পরিবহনশ্রমিকদের রি-অ্যাকশন হচ্ছে। কাউকে হয়রানি বা কারও কাছ থেকে অতিরিক্ত জরিমানা করা হচ্ছে না; বরং জরিমানা আদায়ের ক্ষেত্রে যেখানে বিবেচনা করার মতো ক্ষমতা পুলিশকে দেওয়া হয়েছে, ততটুকু করা হচ্ছে।

বিষয়টি ট্রাফিক বিভাগ ও পুলিশ কমিশনারের নিবিড় তত্ত্বাবধানে নজরদারির মধ্যে রয়েছে উল্লেখ করে বি এম আশরাফ উল্যাহ বলেন, ‘পরিবহনশ্রমিকেরা যেসব দফা দিয়েছেন, সেগুলো নিয়েও আলাপ হয়েছে। আশা করি তাঁদের সঙ্গে ট্রাফিক বিভাগের কোনো দূরত্ব নেই। এরপরও কোনো সমস্যা থাকলে পুলিশ কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সমাধান হবে।’