২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা নিতে ওসিকে আওয়ামী লীগ নেতার আলটিমেটাম

সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ মামলা হিসেবে নেওয়ার দাবিতে পৌর ও উপজেলা আওয়ামী লীগের মানববন্ধন। মঙ্গলবার সন্ধ্য়ায় নলডাঙ্গা পৌরসভা মোড়ে
ছবি: প্রথম আলো

ছাত্রলীগ নেতাকে হাতুড়িপেটার ঘটনায় নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম ওরফে শিমুলসহ তাঁর ১৭ অনুসারীর বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা নিতে নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আলটিমেটাম দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম ওরফে রমজান। অন্যথায় ওসির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে নালিশ করার হুমকি দিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নলডাঙ্গা পৌরসভার সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে শরিফুল ইসলাম এ আলটিমেটাম দেন। নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগ, পৌর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

আরও পড়ুন

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর শুকুরের সভাপতিত্বে সন্ধ্যা পৌনে ছয়টায় মানববন্ধন শুরু হয়। মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা ভিডিও ফুটেজে দেখেছি, রোববার বিকেলে সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামের নির্দেশে তাঁর অনুগত গুন্ডারা নলডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুজ্জামানের ভাতিজা ছাত্রলীগ নেতা শাহরিয়ার ইশতিয়াককে হাতুড়ি ও পাইপ দিয়ে বেধড়ক পিটিয়েছে। সংসদ সদস্যের গাড়িবহরের সামনে মোটরসাইকেল চালানোই ছিল তাঁর অপরাধ। শুধু তা-ই নয়, সংসদ সদস্য একটি অনুষ্ঠান শেষে আবার একই স্থানে এসে পৌর মেয়রকে হত্যাচেষ্টা করেন। তাঁর সঙ্গে থাকা কালো রঙের মাইক্রোবাস থেকে গুন্ডাবাহিনী অবৈধ অস্ত্র নিয়ে মেয়রকে ধাওয়া করে। তাঁকে ঠেকাতে এলে দুই ব্যবসায়ীকে আঘাত করা হয়। এ ঘটনায় মেয়রের ভাই শরিফুল ইসলাম সোমবার সন্ধ্যায় নলডাঙ্গা থানায় সংসদ সদস্যসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে লিখিত এজাহার জমা দেন। এক দিন অতিবাহিত হলেও নলডাঙ্গা থানার ওসি অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করেননি। তিনি অপরাধীদের পক্ষ নিয়েছেন।’

শরিফুল ইসলাম আরও বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযোগ মামলা হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় নলডাঙ্গা আওয়ামী লীগ ওসির বিরুদ্ধে আন্দোলন অব্যাহত রাখবে। প্রয়োজনে ঘটনার ফুটেজ প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হবে। তিনি বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি যেই হোন না কেন, অভিযোগকারী বিচার পাওয়ার হকদার। পুলিশ এতে বাধা হতে পারে না।

মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সিরাজুল ইসলাম, সহসভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মালেক শেখ, নলডাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মনিরুজ্জামান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

নলডাঙ্গা থানার ওসি আবুল কালাম প্রথম আলোকে বলেন, লিখিত একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগে সংসদ সদস্যের নাম আছে। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে তিনি কোনো পক্ষপাতিত্ব করেননি। তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।

সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে তিনি অনেক দূরে ছিলেন। ঘটনাস্থলে এসে তিনি জানতে পারেন, ওই ছেলে (শাহরিয়ার) রাস্তায় বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন। চিনতে না পেরে দলের এক নেতা তাঁকে ধাক্কা দেন। মামলা হওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। রাজনৈতিকভাবে তাঁকে হেয় করতে তাঁর দলের কিছু নেতা মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছেন।