মায়ের পর মারা গেলেন আগুনে দগ্ধ ছেলে

রাফিউল বাশার
ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর বাগমারায় বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে মায়ের মৃত্যুর পর দগ্ধ ছেলেরও মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাফিউল বাশার (১৮) নামের ওই তরুণ মারা যান।

উপজেলার হাসনিপুর গ্রামের মাদারীগঞ্জ বাজারে আজ ভোরে আগুনে পুড়ে মারা যান স্কুলশিক্ষিকা ফরিদা ইয়াসমিন। ফরিদা ইয়াসমিন দুর্গাপুর উপজেলার শিবপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং বাগমারার হাসনিপুর গ্রামের এজাজুল বাশার ওরফে স্বপনের স্ত্রী।

আগুন থেকে বাঁচতে তিনতলা থেকে লাফ দিয়ে ওই দম্পতির দুই ছেলে রাশেদুল বাশার (২৫) ও রাফিউল বাশার (১৮) আহত হন। তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।

চিকিৎসকের বরাত দিয়ে তাঁদের স্বজন ও সাফিক্স প্রি-ক্যাডেট কিন্ডারগার্টেনের প্রধান শিক্ষক জাকিরুল ইসলাম বলেন, আজ সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাফিউল মারা যান। তাঁর শরীরের ৫০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল এবং শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তাঁর বড় ভাই চিকিৎসাধীন। রাশেদুল একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী এবং রাফিউল উচ্চমাধ্যমিক পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য পরীক্ষা দিয়েছেন।

এলাকাবাসী বলেন, তিনতলা ভবনটি একসময় ছিল আশা সিনেমা হল। সিনেমা হলটি বন্ধ হওয়ার পর স্থানীয় বাসিন্দা ও দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মচারী এজাজুল কিনে নেন। সিনেমা হলের তিনতলায় তিনি পরিবার নিয়ে থাকতেন। কয়েকজন ভাড়াটেও ছিলেন। তবে ঈদের কারণে তাঁরা গ্রামের বাড়িতে গেছেন। এ ছাড়া ভবনের অধিকাংশ স্থান বিভিন্ন পণ্যের গুদাম হিসেবে ব্যবহৃত হতো। অগ্নিকাণ্ডের সময় এজাজুল বাসায় ছিলেন না। তিনি গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন।

স্বজন, প্রতিবেশী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতের খাবার খেয়ে দুই ছেলেকে নিয়ে তিনতলার বাসায় ঘুমিয়ে পড়েন স্কুলশিক্ষিকা ফরিদা ইয়াসমিন। ভোরে বাসার দোতলা থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এ সময় আগুন পুরো বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। পরে প্রতিবেশীরা টের পেয়ে চিৎকার শুরু করেন। তাঁদের চিৎকারে ও আগুনের শিখা দেখতে পেয়ে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। তাঁরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা সকালে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ততক্ষণে বাড়িতে থাকা বিভিন্ন আসবাব ও মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তিনতলার একটি কক্ষে ফরিদা ইয়াসমিনের পোড়া লাশ পাওয়া যায়।

বাগমারা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মেহেদি হাসান বলেন, দোতলা থেকে আগুনের সূত্রপাত। সেখানে রান্নার ব্যবস্থা ছিল। চুলার আগুন থেকেই মূলত আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।

বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, রাফিউল বাশারের মৃত্যুর ঘটনায় ঢাকায় অপমৃত্যুর মামলা হবে।

আরও পড়ুন