নিজের জাতীয় পরিচয়পত্রে অন্যের ছবি নিয়ে ঘুরছেন সামছুল, পাচ্ছেন না সুরাহা

পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে সামছুল হক
ছবি: প্রথম আলো

২০০৮ সালে জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে পান সামছুল হক (৬৪)। নাম-ঠিকানা সব ঠিক থাকলেও ছবির জায়গায় এসে বাধে গন্ডগোল। এরপর জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবিটি পরিবর্তনের জন্য নির্বাচন অফিস ও জনপ্রতিনিধির কাছে ধরনা দিয়েছেন। তবে কোনো সুরাহা হয়নি। এই পরিচয়পত্র দিয়ে বিভিন্ন সেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে বিড়ম্বনায় পড়ছেন তিনি। এমনকি নির্বাচনে নিজের ভোটও দিতে পারছেন না।

সামছুল হক (৬৪) জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বীরনগর আটুল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি কৃষিকাজের পাশাপাশি ছোট মুদিদোকান চালান। গতকাল রোববার দুপুরে পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাচন অফিসে এসেছিলেন মো. সামছুল হক। এদিনও তাঁকে শুকনামুখে বাড়ি ফিরে যেতে হয়েছে।

মো. সামছুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ২০০৮ সালে যখন জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) হাতে পান, তখন সেখানে সব সঠিক থাকলেও ছবি ভুল ছিল। তাঁর ছবির স্থানে এলাকার দেবখণ্ডা দীঘির পাড় আদর্শ গ্রামের মো. তহির উদ্দিনের ছবি ছিল। আর তহিরের এনআইডিতে সামছুলের ছবি ছিল। এ নিয়ে ভোট দিতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছিলেন। তখন তহির ও তিনি একসঙ্গে যাওয়ায় ভোট দিতে দেওয়া হয়েছিল।

গুরুত্বপূর্ণ ২২ ধরনের সেবার ক্ষেত্রে এখন জাতীয় পরিচয়পত্রের দরকার পড়ে। এসবের কিছুই পাচ্ছেন না সামছুল হক। তিনি বলেন, ২০১৮ সালে ছবি পরিবর্তনের আবেদন করেছিলেন। এরপর কোনো কাজ হয়নি। প্রায় এক বছর আগে দেবখণ্ডা দীঘির পাড় আদর্শ গ্রামের মো. তহির উদ্দিন মারা যান। তখন সামছুল হককেও জাতীয় পরিচয়পত্রে মৃত দেখানো হয়। বিষয়টি জানতে পেরে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি তিনি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে আবেদন করেন। এই আবেদনের পর তাঁকে ‘মৃত’ থেকে জীবিত দেখানো হয়। এরপর ২২ ফেব্রুয়ারি এনআইডির ছবি পরিবর্তনের জন্য আবার আবেদন করেন। এর আগে ২০১৪ সালে সামছুল হক নতুন ভোটার হওয়ার জন্য ছবিও তুলেছিলেন।

সামছুল হক বলেন, ‘আমি নিজে এতটা বুঝি না। ২০০৮ সালের পর থেকে ছবি পরিবর্তনের জন্য যে যেভাবে বলেছেন, সেভাবেই চেষ্টা করেছেন। এখনো ছবি পরিবর্তনের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। দীর্ঘদিনের এই সময়ে আমি কোনো নির্বাচনে ভোট দিতে পারিনি। জমি কেনা, ব্যাংকঋণ নেওয়া, মোবাইল সিম তোলাসহ নানা কাজে গিয়ে আমি ঘুরে এসেছি। এবার ছবি পরিবর্তন না হলে আর কখনো চেষ্টা করব না।’

জানতে চাইলে পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এনআইডিতে মৃতের যে বিষয়টি ছিল, তা সংশোধন করা হয়েছে। এখন ছবি পরিবর্তনের জন্য আবেদন করা আছে। এটি ঢাকা কার্যালয় থেকে যাচাইয়ের জন্য ক্যাটাগরি করে জেলা নির্বাচন কার্যালয় বা বিভাগীয় কার্যালয়ে দেবে। এরপর যাচাই করে ছবি পরিবর্তন করা হবে।