আখাউড়ায় চেয়ারম্যান প্রার্থীকে গালিগালাজ করায় মেয়রকে শোকজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানচিত্র

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচারণাকালে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল মতিনকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রিটার্নিং কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলাম তাঁদের এ নোটিশ দেন।

তাকজিল খলিফা আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আবদুল মতিন উপজেলার মোগড়া ইউপির চেয়ারম্যান।

দ্বিতীয় ধাপে ২১ মে আখাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক মুরাদ হোসেন ভূঁইয়া (আনারস প্রতীক) এবং মোগড়া ইউপির তিনবারের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মো. মনির হোসেন (ঘোড়া প্রতীক) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

তাকজিল খলিফার বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে বুধবারের মধ্যে তাঁকে সশরীর উপস্থিত হয়ে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়।

কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছে, নির্বাচন উপলক্ষে চেয়ারম্যান প্রার্থী মুরাদ হোসেন ভূঁইয়ার (আনারস প্রতীক) পক্ষে প্রচারণাকালে পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। উপজেলার মোগড়া ইউপি কার্যালয়ে এক সভায় তিনি ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মনির হোসেনের উদ্দেশে গালি দিয়েছেন। এটি উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা ২০১৬-এর অনুচ্ছেদ ১৮ পরিপন্থী। মোগড়া ইউপি কার্যালয় ব্যবহার করে নির্বাচনী প্রচারণা করায় আচরণবিধির অনুচ্ছেদ ৬ ও ১৮ লঙ্ঘিত হয়েছে। এ কারণে তাকজিল খলিফার বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে আগামীকাল বুধবারের মধ্যে তাঁকে সশরীর উপস্থিত হয়ে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়।

অপর দিকে মোগড়া ইউপি কার্যালয় ব্যবহার করে নির্বাচনী প্রচারণা করায় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মতিন উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণবিধি) ২০১৬-এর অনুচ্ছেদ ৬ লঙ্ঘন করেছেন। এ জন্য আবদুল মতিনের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে বুধবারের মধ্যে সশরীর উপস্থিত হয়ে তাঁকে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল সোমবার বিকেলে মোগড়া ইউপি কার্যালয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী মুরাদ হোসেনের সমর্থনে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী মনির হোসেনের উদ্দেশে গালি দেন। এ ছাড়া একই রাতে উপজেলার অন্য জায়গায় অনুষ্ঠিত এক সভায় বক্তব্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী মনিরের উদ্দেশে আবার গালিগালাজ করেন তাকজিল খলিফা। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আচরণবিধি ১৮-এর ‘ক’ ধারামতে, নির্বাচনী প্রচারণাকালে কেউ ব্যক্তিগত চরিত্র হনন করে বক্তব্য প্রদান বা কোনো ধরনের তিক্ত বা উসকানিমূলক বা মানহানিকর কিংবা লিঙ্গ, সাম্প্রদায়িকতা বা ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগে, এমন কোনো বক্তব্য প্রদান করতে পারবেন না। এ ছাড়া একাধিক দিন আখাউড়া পৌর কার্যালয় ব্যবহার করে মুরাদের পরিচয় ও মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত হয়। সেসব সভায় তাকজিল খলিফাসহ আওয়ামী লীগের অন্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

চেয়ারম্যান প্রার্থী মনির হোসেন বলেন, ‘আমি দীর্ঘ ১৮ বছর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও তিনবার ইউপি চেয়ারম্যান ছিলাম। মেয়রের বক্তব্য সত্যিই দুঃখজনক।’

আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা প্রথম আলোকে বলেন, ‘মনির একজন প্রার্থী। অনেক কথাই বলতে পারেন। আমি এমন কথা বলিনি। তাঁর অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আর আমি আওয়ামী লীগ নেতা। সভাটি দলীয় কার্যালয়ে হয়। আর পৌরসভা কার্যালয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী মুরাদ হোসেন আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন।’