সাত বছর ধরে কাঠের তৈরি শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে খুদে শিক্ষার্থীরা

কাঠের তৈরি শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে শিশুশিক্ষার্থীরা। খাগড়াছড়ির দীঘিনালার ১ নম্বর কবাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

খাগড়াছড়ির দীঘিনালার কবাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক্‌ প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ৭০২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তবে বিদ্যালয়ে কোনো শহীদ মিনার নেই। সাত বছর ধরে কাঠ দিয়ে তৈরি করা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে আসছে শিক্ষার্থীরা।

আজ মঙ্গলবার সকালে বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মাঠের এক পাশে তিনটি টুলের ওপর শহীদ মিনারটি বসানো হয়েছে। কাঠের তৈরি শহীদ মিনারটি নতুন করে কালো রং করা হয়েছে। চারদিকে বাঁশ ও সুতলি দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ের কয়েক শ শিক্ষার্থী প্রভাতফেরি শেষে সারিবদ্ধভাবে মাঠে দাঁড়িয়েছে। একে একে তারা ফুল হাতে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে।

বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মো. খলিলুর রহমান এখন স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে পড়ছেন। ফুল দিতে তিনিও এসেছিলেন। খলিলুর বলেন, ‘আমরাই প্রথম ২০১৭ সালে দেড় হাজার টাকা খরচ করে কাঠ দিয়ে অস্থায়ী বা ভ্রাম্যমাণ শহীদ মিনারটি তৈরি করেছিলাম। সেই শহীদ মিনার বিদ্যালয়ে এখনো আছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদের তৈরি কাঠের শহীদ মিনারেই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শ্রদ্ধা জানায়। আমিও প্রতিবছর কাঠের তৈরি শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসি।’

বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির মো. পারভেজ ও তানিয়া আক্তার, অষ্টম শ্রেণির হালিমা আক্তার বলে, গতকাল সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাঠের তৈরি শহীদ মিনারটি নতুন করে কালো রং করে মাঠের এক পাশে স্থাপন করেছে শিক্ষার্থীরা। প্রতিবছর এভাবে তারা ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে আসছে। বিদ্যালয়ে একটি স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করা হলে তাদের জন্য অনেক ভালো হতো।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কে এম বদিউজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, কাঠের তৈরি শহীদ মিনারটি প্রতিবছরই রং করা হয়। সব দায়িত্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই পালন করে। তবে বিদ্যালয়ে একটি স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করা হলে খুব ভালো হতো। তহবিল না থাকায় তাঁরা সেটি করতে পারছেন না। কেউ শহীদ মিনার নির্মাণে সহায়তা করলে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হতো।