চট্টগ্রামের যে ৯ বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত

পরীক্ষা দিতে এসে ফিরে যেতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। গতকাল বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম নগরের জামালখান এলাকায়ছবি: সৌরভ দাশ

চার দফা দাবিতে সারা দেশের মতো চট্টগ্রাম নগরের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষকেরা। ফলে বিদ্যালয়গুলোর বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। শিক্ষকেরা বলছেন, তাঁরা আগেই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জানিয়েছেন। তবে গতকাল সোমবার অন্তত তিনটি বিদ্যালয়ের সামনে থেকে শিক্ষার্থীদের ফেরত যেতে দেখা গেছে। আজ মঙ্গলবারও চলছে শিক্ষকদের কর্মবিরতি।

বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ব্যানারে এ কর্মসূচি চলছে। সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়, দীর্ঘদিনের পেশাগত মর্যাদা ও বেতন-ভাতাসংক্রান্ত চার দফা দাবির বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে শিক্ষকেরা দুই দিন অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। কিন্তু দাবিগুলো না মানায় এখন লাগাতার কর্মবিরতিতে গেছেন।

চট্টগ্রাম নগরের সরকারি বিদ্যালয় মোট ১০টি। সেগুলো হলো চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, সরকারি মুসলিম উচ্চবিদ্যালয়, হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, বাকলিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, ডা. খাস্তাগীর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, সিটি সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল ও চট্টগ্রাম সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, এই ১০ বিদ্যালয়ের মধ্যে চট্টগ্রাম সরকারি মডেল স্কুল ব্যতীত বাকি ৯টি বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। পরীক্ষার সময়সূচি পরে জানিয়ে দেওয়া হবে। গতকাল খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে দুজন শিক্ষার্থী ও তিনজন অভিভাবকের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা জানান, বিদ্যালয় থেকে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে অনেকেই সেটি দেখেননি, কারণ রাতে দেওয়া হয়েছিল। কত দিন পরীক্ষা হবে না, সেটি আগে জানিয়ে দিলে শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো হয়।

গতকাল নগরের ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে শিক্ষকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন। শিক্ষকেরা জানান, ১৯৭৭ সাল থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা দশম গ্রেডে আছেন। অথচ একই মর্যাদার অন্যান্য ক্ষেত্রের কর্মকর্তাদের ইতিমধ্যে নবম গ্রেড করা হয়েছে। ফলে শিক্ষকদের বঞ্চিত করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম নগরের সরকারি বিদ্যালয় মোট ১০টি। সেগুলো হলো চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, সরকারি মুসলিম উচ্চবিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, বাকলিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, ডা. খাস্তাগীর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, সিটি সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল ও চট্টগ্রাম সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

শিক্ষকদের চার দফা দাবিগুলো হলো সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক‍্যাডারভুক্ত করে ‘মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের’ গেজেট প্রকাশ; বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখায় কর্মরত শিক্ষকদের বিভিন্ন শূন্য পদে নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন দ্রুত কার্যকর করা; সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আলোকে বকেয়া টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের মঞ্জুরি আদেশ দেওয়া এবং ২০১৫ সালের আগের মতো সহকারী শিক্ষকদের দুই থেকে তিনটি ইনক্রিমেন্টসহ অগ্রিম বর্ধিত বেতন-সুবিধা বহাল করে গেজেট প্রকাশ।

বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আবসার উদ্দিন বলেন, ‘কর্মবিরতির জন্য বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত রয়েছে। আমরাও শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করছি। তাই শুক্র ও শনিবার পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা আছে। ডিসেম্বরের মধ্যে ফলাফলও দেওয়া যাবে।’