রাজশাহীতে অবরোধের প্রায় চার ঘণ্টা পর ঢাকা-রাজশাহী রেলপথ থেকে সরে গেছেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। আজ শুক্রবার বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশনবাজারসংলগ্ন রেললাইন অবরোধ করেন তাঁরা। পরে রাত ৯টার দিকে অবরোধ তুলে নিলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ যে ‘ন্যক্কারজনক হামলা’ চালিয়েছে, সেটির তীব্র নিন্দা ও সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার চান তাঁরা। সারা দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনে প্রথম মারধরের শিকার হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোস্তফা মিয়া। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি এবং ওই শিক্ষার্থীকে সসম্মানে হলে ফেরানোর জন্য প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলেন। এ ছাড়া এক দফা দাবি অবিলম্বে মেনে নিয়ে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফেরানোর জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানান তাঁরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সুজন ভৌমিক আজকের কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘আজকের মতো আমাদের সমাবেশ ও বিক্ষোভ এখানেই শেষ হলো। সারা দেশে যেহেতু কাল কোনো কর্মসূচি নেই, তাই আমাদেরও কোনো কর্মসূচি রাখা হয়নি। কাল শুধু আমরা গণসংযোগ করব। আন্দোলন সফল করতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে অবিলম্বে একটি ভলান্টিয়ার টিম গঠন করা হবে।’
এদিকে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেওয়ায় ৯টা ২০ মিনিট থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক আবদুল করিম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে চারটি ট্রেনের সূচিতে পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক আছে।
গত সোমবার থেকে সারা দেশের আন্দোলনকারীরা এক দফা দাবি জানিয়ে আসছেন। তাঁদের দাবিটি হলো, সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটাপদ্ধতি সংস্কার করতে হবে।
এর আগে বিকেল ৪টা ১০ মিনিটের দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের প্যারিস রোড হয়ে বিভিন্ন আবাসিক হল ঘুরে ক্যাম্পাসসংলগ্ন স্টেশনবাজার এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা রেললাইন অবরোধ করেন। বিক্ষোভে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।