দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটিই কমেছে

ফলাফল প্রকাশের আনন্দের স্মৃতি ক্যামেরাবন্দী করছেন শিক্ষার্থীরা। দিনাজপুর শহরের হলিল্যান্ড স্কুল ও কলেজ প্রাঙ্গণে
ছবি: প্রথম আলো

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে এবার উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার ফলাফলে গত দুই বছরের তুলনায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। আজ বুধবার দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশিত পরীক্ষার ফলাফলে এসব তথ্য জানান বোর্ডের চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম। এবার বোর্ডে পাসের হার ৭৯ দশমিক শূন্য ৮। অন্যদিকে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১১ হাজার ৮৩০।

পাসের হার কমার বিষয়ে বোর্ডের উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মানিক হোসেন বলেন, ২০২০ সাল ছিল অটো পাসের বছর। ২০২১ সালে চতুর্থ বিষয়সহ শুধু ঐচ্ছিক বিষয়গুলোর পরীক্ষা হয়েছে। ফলে গত দুই বছর পাসের হার বেশি ছিল। কিন্তু এবার সব বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ফলে পাসের হার কমেছে।

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, এবার বিভাগে ৬৭১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ৯৯ হাজার ৭০৫ পরীক্ষার্থী অংশ নেন। এর মধ্যে পাস করেছেন ৭৮ হাজার ৮৪৯ জন। ২০২১ সালে পাসের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৪ হাজার ৪৮৪, পাসের হার ছিল ৯২ দশমিক ৪৩। ২০২০ সালে ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৩৫ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাস করেছিলেন। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১১ হাজার ৮৩০ জন। ২০২১ সালে এই সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার ৩৪৯, ২০২০ সালে ১৪ হাজার ৮৭১ জন।

ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, এবার মানবিক বিভাগে ৬৫ হাজার ৮২৮ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছেন ৫২ হাজার ১৪৬ জন। পাসের হার ৭৯ দশমিক ২২ শতাংশ। বিজ্ঞান বিভাগে ২৩ হাজার ৮৭৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছেন ১৯ হাজার ৮৭১ জন, পাসের হার ৮৩ দশমিক ২২। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৯ হাজার ৯৯৮ জনের মধ্যে পাস করেছেন ৬ হাজার ৮৩২ জন। পাসের হার ৬৮ দশমিক ৩৩। বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৭ হাজার ১৫৩, মানবিক বিভাগে ৪ হাজার ২০৭ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪৭০ জন।

জিপিএ-৫ ও পাসের হারে এগিয়ে আছে মেয়েরা

পাস করা শিক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্রী সংখ্যা ৪০ হাজার ৬৩৩। পাসের হার ৮২ দশমিক ১৩। আর ছাত্র পাসের সংখ্যা ৩৮ হাজার ২১৬। পাসের হার ৭৬ দশমিক শূন্য ৮। জিপিএ-৫ পাওয়ার ক্ষেত্রে ছাত্রী সংখ্যা ৬ হাজার ২৫৫ এবং ছাত্র সংখ্যা ৫ হাজার ৫৭৫।
পাসের হারে এগিয়ে নীলফামারী, জিপিএ-৫-এ রংপুর

এই শিক্ষা বোর্ডের অধীন রংপুর বিভাগের ৮টি জেলার ৯৯ হাজার ৭০৫ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন। এর মধ্যে ৮৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করে প্রথম স্থানে আছে নীলফামারী জেলা। ৮৪ দশমিক ৪২ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করে দ্বিতীয় স্থানে রংপুর জেলা। এ ছাড়া গাইবান্ধা জেলায় পাসের হার ৭৯ দশমিক ৪৫, লালমনিরহাটে ৭৯ দশমিক ৩০, দিনাজপুরে ৭৬ দশমিক ১৯, ঠাকুরগাঁওয়ে ৭৬ দশমিক ১৭, কুড়িগ্রামে ৭৪ দশমিক ৯৪ এবং পঞ্চগড়ে পাসের হার ৬৮ দশমিক ৯৮।

অন্যদিকে ৪ হাজার ৪৫১ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়ে প্রথম স্থানে রয়েছে রংপুর জেলা। ২ হাজার ৩৬২ জন জিপিএ-৫ পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে দিনাজপুর জেলা। এ ছাড়া নীলফামারীতে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ হাজার ৪৬০ জন, গাইবান্ধায় ১ হাজার ২৬৫ জন, কুড়িগ্রামে ৬৮৭ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে ৬৮৩ জন, লালমনিরহাটে ৫৬৫ জন এবং পঞ্চগড়ে ৩৫৭ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন।