ময়মনসিংহে বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমানের জানাজা আজ বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়। নগরের আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে
ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের আওয়ামী লীগের রাজনীতির ‘প্রাণপুরুষ’ হিসেবে পরিচিত বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের (৮২) মৃত্যুতে জেলার সর্বস্তরের মানুষ শোক প্রকাশ করেছেন।

আজ সোমবার বিকেলে ময়মনসিংহের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে মতিউর রহমানের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মতিউর রহমানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশের জন্য ময়মনসিংহ নগরের বিভিন্ন এলাকার বিপণিবিতান সোমবার বন্ধ রাখা হয়।

গতকাল রোববার রাত ১১টায় মতিউর রহমান ময়মনসিংহের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। পরিবারের পক্ষ থেকে রাত পৌনে তিনটার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর মৃত্যু সংবাদ জানানো হয়।

পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল তাঁর শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে নেক্সাস কার্ডিয়াক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি মারা যান। তাঁর অসুস্থতার কথা শুনে রাত ১১টা থেকেই ময়মনসিংহ নগরের বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষ হাসপাতালে ভিড় করেন। মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে যান ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম, সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন, ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

স্বজনেরা আরও বলেন, ১৯৪২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে মতিউর রহমান জন্মগ্রহণ করেন। মতিউর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর ময়মনসিংহকে মুক্ত ঘোষণা করা হয়। মতিউর রহমান জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য। ২০২২ সালে তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন।

জানাজায় অংশ নেওয়া মানুষের একাংশ
ছবি: সংগৃহীত

মতিউর রহমান ময়মনসিংহের আলমগীর মুনসুর (মিন্টু) মেমোরিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। সোমবার বেলা ১১টার দিকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তাঁর লাশ কলেজের মাঠে রাখা হলে সেখানে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে। মতিউর রহমানকে শেষবার দেখতে মিন্টু কলেজ মাঠে আসেন দলমত-নির্বিশেষে সব শ্রেণির মানুষ।

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকরামুল হক বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিতপ্রাণ নেতা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে তিনি আজীবন লালন করেছেন। তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।

আরও পড়ুন

সাবেক ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান আর নেই

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি এমদাদুল হক মিল্লাত বলেন, ‘তিনি একজন নিষ্ঠাবান রাজনীতিক ছিলেন। একজন আদর্শ শিক্ষক ছিলেন। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি একটি ক্যাম্প পরিচালনা করেছেন। ১০ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ মুক্ত দিবসের দিন তাঁর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় মিছিল নিয়ে ময়মনসিংহে প্রবেশ করেন। এত বড় মাপের নেতা হওয়ার পরও সাধারণ মানুষের সঙ্গে তাঁর নিবিড় যোগাযোগ ছিল।’