‘এমপির কথা বলে’ ভোট চাওয়ায় সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর

ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে চিতলমারী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী এস এম অহিদুজ্জামানের সংবাদ সম্মেলন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবেছবি: প্রথম আলো

প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন এক প্রার্থী। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে ভোট বর্জন ও নির্বাচন না করার এই ঘোষণা দেন এস এম অহিদুজ্জামান। তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছিলেন।

‘নির্বাচনের পরিবেশ নেই’ উল্লেখ করে অহিদুজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘যেখানে প্রার্থীর পক্ষে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন মাননীয় এমপি শেখ হেলাল উদ্দীনের বরাত দিয়ে (বর্তমান চেয়ারম্যান অশোক কুমার বড়ালের জন্য) ভোট চাইছে, সেখানে নির্বাচন কখনোই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে না। অশোক কুমার বড়াল মাননীয় এমপি সাহেব মনোনীত ও সমর্থিত বলে ভোট চাইছে। এতে ভোটাররা বিভ্রান্ত হচ্ছে। আমি অত্যন্ত দুঃখের সাথে লক্ষ করছি, ভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা ও এমপি মহাদয়ের ব্যক্তিগত সহকারী ফিরোজুল ইসলাম অশোক কুমার বড়ালের পক্ষে ভোট চাইছেন।’

চিতলমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এস এম অহিদুজ্জামান অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় প্রার্থী ও প্রতীক না দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন। কিন্তু এখানে একজনকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বলে প্রচার করা হচ্ছে। উপজেলা আওয়ামী লীগ বর্ধিত সভা ডেকে সবাইকে অশোক বড়ালের প্রতীকে ভোট দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। তাঁর পক্ষে কাজ না করলে দলীয় নেতা–কর্মীদের বহিষ্কার করাসহ অন্যদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন অভিযোগে রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি অহিদুজ্জামান।
সার্বিক পরিবেশ ও পরিস্থিতি বিবেচনা সাপেক্ষে নির্বাচন অস্বচ্ছ হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে অহিদুজ্জামান বলেন, ‘নির্বাচন বর্জন করছি এবং এই নির্বাচনে আমি কাউকেই সমর্থন করছি না।’ এমন নির্বাচনে নিজেও ভোট দেবেন না বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এ ছাড়া অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু জাফর মো. আলমগীর হোসেনের (দোয়াত-কলম) বিরুদ্ধেও সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর অভিযোগ তোলেন এস এম অহিদুজ্জামান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান, সন্তোষপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিউটি আক্তারসহ কর্মী-সমর্থকেরা।

তবে অভিযোগের বিষয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অশোক কুমার বড়াল বলেন, ‘আমি কখনো বলিনি, এমপি সাহেব আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। আমি শুধু বলেছি, আওয়ামী লীগের নেতারা আমার সাথে আছেন। এর থেকে বেশি কিছু বলা হয়নি।’

অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক অরবিন্দ বিশ্বাস বলেন, একজন ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অহিদুজ্জামান অভিযোগ করেছিলেন। তাঁকে শোকজ করা হয়েছে এবং নির্বাচনী কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। অভিযুক্ত চেয়ারম্যান এখন নির্বাচনী কাজ করছেন না। এ ছাড়া অন্য কোনো অভিযোগ তাঁরা পাননি।