ভারতের সঙ্গে জয়ের পর শ্রীমঙ্গলের বাড়িতে শমিত, মানুষের ভিড়, উৎসব
বাংলাদেশ জাতীয় দলে যোগ দেওয়ার পর প্রথমবারের মতো মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পৈতৃক বাড়িতে গিয়েছেন ফুটবলার শমিত সোম। ভারতের বিরুদ্ধে ২২ বছর পর জয়ের আনন্দ নিয়ে আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে তিনি শ্রীমঙ্গলের দক্ষিণ উত্তরসুর গ্রামে পৌঁছালে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে।
পরিবারের সদস্যদের উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি কানাডায় জন্ম নেওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই ফুটবলারকে একনজর দেখতে আশপাশের মানুষ ছুটে আসেন। শমিত সোম গাড়ি থেকে নামতেই মঙ্গলপ্রদীপ জ্বালিয়ে বরণ করে নেন চাচা-চাচীসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা। পরে বাড়িতে প্রবেশ করেন ২৭ বছর বয়সী এই ফুটবলার।
আগে অনেকবার এসেছি। তবে জাতীয় দলে খেলার পর এটাই প্রথমবার। এবারের অনুভূতিটা একদমই আলাদা।
শমিত সোমের আসার খবরে কয়েক দিন ধরেই তাঁর পৈতৃক বাড়িতে উৎসবের আমেজ। স্বজনেরা সুন্দর করে ঘরবাড়ি সাজিয়েছেন। বাড়িতে তাঁর ফুটবল খেলার ছবি দিয়ে ব্যানার টানানো হয়েছে। আগে অনেকবার এসেছেন, তবে বাংলাদেশ দলে যোগ দেওয়ার পর এবারই প্রথম যাওয়া। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার ভারতের বিপক্ষে জয় নিয়ে ফেরায় উৎসব আরও বেড়ে যায়।
বাড়িতে ফিরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন শমিত। তিনি বলেন, ‘বাড়িতে এসে সত্যিই খুব ভালো লাগছে। পরিবারের সবাইকে দেখে মন ভরে গেছে। গতকাল ভারতের সঙ্গে আমরা জিতেছি, এটা ভেবে এখনো খুব আনন্দ লাগছে। একটু ক্লান্ত লাগলেও পরিবারের মানুষের ভালোবাসায় সব ক্লান্তি দূর হয়ে গেছে। আগে অনেকবার এসেছি। তবে জাতীয় দলে খেলার পর এটাই প্রথমবার। এবারের অনুভূতিটা একদমই আলাদা।’
বাড়িতে ফিরে আলু ভাজা, পেঁপে ভাজা ও ইলিশ ভাজা খাওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন। ছোটবেলায় ক্রিকেটসহ আরও অনেক খেলা খেলেছেন, সেই স্মৃতিচারণাও করেন। তিনি বলেন, ‘গতকাল দিনটা ছিল বিশেষ। কারণ, আমরা ২২ বছর পর ভারতকে হারিয়েছি। দলের সবাই আত্মবিশ্বাসী ছিল যে আমরা জিতব। সামনে আরও ম্যাচ আছে। আশা করি, সেগুলোতে আরও ভালোর দিকে এগোব। সিজন শেষ হয়েছে। ছুটি পেয়েছি, তাই বাড়িতে চলে এসেছি।’
নিজের পরিবার নিয়ে বলতে গিয়ে জাতীয় দলের এই ফুটবলার জানান, ‘শুনেছি আমার দাদু মানিক সোম খুব ভালো ফুটবলার ছিলেন। যদিও তাঁকে খেলতে দেখার সুযোগ হয়নি। তারপরও ভাবতে ভালো লাগে যে আমার ফুটবলের প্রতিভা হয়তো পরিবার থেকেই এসেছে।’ বাংলাদেশ দল নিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক খেলোয়াড়ের সঙ্গে আমার দারুণ সম্পর্ক। দলও এখন অনেক শক্তিশালী। দলে অনেক কম বয়সী খেলোয়াড় আছে, যারা ভবিষ্যতে জাতীয় দলের বড় ভরসা হবে। বাংলাদেশের ফুটবল আরও ওপরে উঠবে, আমি বিশ্বাস করি। বাফুফেও আমাদের যথেষ্ট সহযোগিতা করছে, যেন আমরা সর্বোচ্চটি দিতে পারি।’
তরুণ খেলোয়াড়দের উদ্দেশে শমিত সোম বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় অনেক ভালো খেলোয়াড় আছেন। একসময় তাঁরা বয়সে বড় হয়ে যাবেন, তখন তাঁরাই জাতীয় দলে সুযোগ পাবেন। তরুণ খেলোয়াড়দের এখন থেকেই মনোযোগ দিয়ে প্রস্তুতি নেওয়া দরকার।