খেলা নিয়ে বিরোধ, পাকুন্দিয়ায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৩০

পাকুন্দিয়ায় কাবাডি খেলা নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের বিরোধ। শনিবার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় কাবাডি খেলা নিয়ে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে বিরোধের জেরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার উপজেলার পুলেরঘাট এলাকায় পুলেরঘাট-গচিহাটা সড়কে দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত থেমে থেমে এ সংঘর্ষ চলে।

প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১০ জনকে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাৎক্ষণিকভাবে আহত ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট স্থানীয়ভাবে একটি কাবাডি খেলার আয়োজন করা হয়। ওই খেলাকে কেন্দ্র করে কটিয়াদী উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের ভিটিপাড়া ও পাকুন্দিয়া উপজেলার পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়নের আদর্শপাড়ার বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। সেই বিরোধের জেরে গত শুক্রবার রাতে আবার দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। আজ সকালে ওই বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য স্থানীয়ভাবে সালিসের আয়োজন করা হয়। এতে কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনের সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদের অনুসারী মো. আলম এবং একই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আবদুল কাহার আকন্দের অনুসারী মো. জামানের নেতৃত্বে দুই পক্ষ সালিস শুরুর আগেই দেশি অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের ওই দুই পক্ষের নেতৃত্বে দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত ভিটিপাড়া, আদর্শপাড়া ও নয়াপাড়া গ্রামবাসীর মধ্যে এ সংঘর্ষ চলে।

সংঘর্ষের সময় দোকানপাটে ভাঙচুর চালানো হয়। শনিবার দুপুরে পাকুন্দিয়ার পুলেরঘাট এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

এলাকাবাসী জানান, থেমে থেমে চলা সংঘর্ষের সময় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাজারের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পুলেরঘাট-গচিহাটা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১০ জনকে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

আবদুল কাহার আকন্দের অনুসারী মো. জামান প্রথম আলোকে বলেন, প্রথমে খেলা নিয়েই মারামারি শুরু হয়। পরে তাঁদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদের অনুসারী আলমের নেতৃত্বে একদল লোক দেশি অস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা করেন। এতে তাঁদের ২০ থেকে ২৫ জন লোক আহত হয়েছেন। তাঁদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদের অনুসারী আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

পাকুন্দিয়ার আহুতিয়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।