কক্সবাজারেই ফলছে ড্রাগন, স্বাদে মিষ্টি ও দামে কম

কক্সবাজারের বাজারে এখন স্থানীয় ড্রাগনের বেশ কদর
ছবি: প্রথম আলো

কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়কের দুই পাশেই সারি সারি ফলের দোকান। রংবেরঙের ফল থরে থরে সাজানো। প্রায় সব দোকানেই চোখে পড়ে বড় আকৃতির লাল ড্রাগন ফল। রামু উপজেলার ফলের বাগান ‘অরণ্য’ থেকে এসব ড্রাগন ফল আনা হয় বলে জানান ব্যবসায়ীরা। আকারে বড়, স্বাদে মিষ্টি ও দামে সস্তা হওয়ায় বাজারে এই ড্রাগন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়কের শিহাব ফল বিতানে গিয়ে দেখা যায়, আপেল, কমলা, আঙুরের সঙ্গে ক্রেতারা লাল ড্রাগনও কিনছেন। দোকানের মালিক সিরাজুল ইসলাম (৪৫) বলেন, এক মাস আগেও যশোর ও ঢাকা থেকে আনা ড্রাগন বিক্রি হতো দোকানগুলোতে। সেসব ড্রাগনের কেজি ছিল ৫০০-৬০০ টাকা। এখন তিনি অরণ্যের ড্রাগন বিক্রি করেন। একেকটির ওজন ৭০০-৯০০ গ্রাম। দাম কেজিতে ৩৫০-৩৭০ টাকার মধ্যে।

এই ড্রাগন বাজারে আসায় যশোরের ড্রাগনের চাহিদা কমে গেছে। কক্সবাজার ফল ব্যবসায়ী দোকান মালিক সমিতির সভাপতি নওশা মিয়া (৬৫) বলেন, শহরের প্রধান সড়কের দুই পাশে ফলের দোকান আছে ৫০-৬০টি। এসব দোকানে, ফুটপাতে ও ফেরি করে দৈনিক কয়েক মণ ড্রাগন বিক্রি হয়। এসবের ৮০ শতাংশই অরণ্যের লাল ড্রাগন।

সাত একর জায়গা নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে ফলের বাগান ‘অরণ্য’। কক্সবাজার শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে রামু উপজেলার রশিদনগর ইউনিয়নে বাগানটির অবস্থান। এর উদ্যোক্তা ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান। তিনি বলেন, শখের বশে বাগানটি করেছিলেন তিনি। প্রথম তিন বছর লোকসান গুনতে হয়েছে। গত বছর থেকে বাণিজ্যিকভাবে তাঁর বাগানের ড্রাগন ফল বাজারে যাচ্ছে।

সরেজমিন দেখা গেল, ৮০ শতাংশ জমিতে ড্রাগনের চাষ হচ্ছে। বাগানে খুঁটি আছে ২৫০টি। একটি খুঁটিতে চারটি করে ড্রাগনগাছ বাঁধা। প্রতিটি গাছে ঝুলছে ৯ থেকে ১৫টি করে ফল। ড্রাগনের পাশাপাশি আছে বিভিন্ন জাতের আম, মাল্টা, লিচু, সৌদি খেজুর, আঙুর, রাম্বুটান, মিষ্টি জলপাই, মিষ্টি তেঁতুল, পেঁপে, বরই, পেয়ারা, বিভিন্ন জাতের লেবু, কাজুবাদামের গাছ।

ড্রাগনবাগানে কথা হয় অরণ্যের পরিচালক শিরিন রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, সাত দিন পরপর গাছ থেকে ড্রাগন কাটা হয়। সব মানুষ যেন ড্রাগন খেতে পারেন, এ জন্য দাম কম রাখা হয়।

বাগানের পরিচর্যার কাজে যুক্ত চাষি বকুল হোসেন বলেন, এ বছর এখন পর্যন্ত পাঁচ লাখ টাকার ড্রাগন বিক্রি হয়েছে। আরও কয়েক লাখ টাকার ড্রাগন গাছে আছে। কক্সবাজার শহর ছাড়াও রামু, ঈদগাঁও, চকরিয়া, উখিয়া, টেকনাফের বাজারে তাঁদের ড্রাগন বিক্রি হচ্ছে। এখান থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি ড্রাগন ২৫০ টাকায় কিনে নেন।