পুলিশ সদস্যকে পেটানোর মামলায় গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতা আশিকুর রহমান
ছবি: সংগৃহীত

পাবনার ঈশ্বরদীতে বৈধ কাগজপত্রবিহীন মোটরসাইকেল জব্দ করায় ছাত্রলীগের এক নেতা তাঁর বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে হাইওয়ে পুলিশের এক সদস্যকে পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে এ ঘটনায় করা মামলায় ওই ছাত্রলীগ নেতা ও তাঁর বন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ শুক্রবার সকালে ওই দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন জেলা সদরের মালিগা ইউনিয়নের মজিদপুর হাটপাড়া গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে আশিকুর রহমান (২৪) ও সৌরভ আলীর ছেলে হাসিব আলী (২৯)। তাঁদের মধ্যে আশিকুর রহমান মালিগাছা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও পাবনা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। হাসিব আলী ছাত্রলীগকর্মী ও আশিকুরের বন্ধু। তাঁদের মারপিটে সাধন চন্দ্র (৪০) নামের হাইওয়ে পুলিশের এক কনস্টেবল আহত হয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

আশিকুরের দলীয় পরিচয় নিশ্চিত করে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, ‘ছাত্রলীগ কোনো অপরাধ সমর্থন করে না। সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন কাজ করলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে অবশ্যই তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’

ঈশ্বরদীর পাকশী হাইওয়ে থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল জেলা সদরের টেবুনিয়া বাজার এলাকায় পাবনা-ঈশ্বরদী মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের চেকপোস্ট বসে। এ সময় আশিকুর হেলমেটবিহীন অবস্থায় তাঁর বন্ধুকে নিয়ে উল্টোপথে মোটরসাইকেল নিয়ে চেকপোস্ট অতিক্রমের চেষ্টা করেন। পুলিশ সদস্যরা তাঁদের থামিয়ে মোটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখতে চান। কাগজপত্র না থাকায় মোটরসাইকেলটি জব্দ করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দুজন ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। কিছুক্ষণ পর হাইওয়ে পুলিশের কনস্টেবল সাধন চন্দ্রকে দিয়ে মোটরসাইকেলটি ঈশ্বরদী হাইওয়ে থানায় পাঠানো হয়।

পাকশী হাইওয়ে থানা–পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিস কুমার সান্যাল জানান, কনস্টেবল সাধন কুমার মোটরসাইকেলটি নিয়ে ঈশ্বরদীর দিকে রওনা দেন। পথিমধ্যে আশিকুর ও হাসিব অপর একটি মোটরসাইকেল নিয়ে ধাওয়া দিয়ে সাধন কুমারকে আটকে বেধড়ক মারপিট করে। সেই সঙ্গে মোটরসাইকেলটি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে চেকপোস্টে থাকা অন্য সদস্যরা খবর পেয়ে এসে সাধন কুমারকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। একই সঙ্গে ঈশ্বরদী থানা পুলিশের সহযোগিতায় দুটি মোটরসাইকেলসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক তদন্ত (ওসি তদন্ত) হাসান বাসির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, মারপিটের সময় ঈশ্বরদী থানা পুলিশের একটি দল আদালতে আসামি দিয়ে থানায় ফিরছিলেন। সড়কে পুলিশের পোশাক পরা কাউকে মারপিট করতে দেখে তাঁরা সেখানে থেমে যান এবং হাইওয়ে পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করেন। হাসান বাসির আরও বলেন, ঘটনায় হাইওয়ে পুলিশের এসআই বেলাল হোসেন বাদী হয়ে দুজনের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর আক্রমণের ঘটনায় মামলা করেছেন। মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ সকালে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।