নারায়ণগঞ্জে শিশু জয়ন্ত হত্যার মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি অনিক চন্দ্র দাসকে কারাগারে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। দণ্ডিত অপর তিন আসামি পলাতকছবি: প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে প্রায় ছয় বছর আগে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে জয়ন্ত চন্দ্র দাস (১০) নামের এক শিশুকে অপহরণের পর হত্যার মামলায় চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আসামিদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক উম্মে সরাবন তহুরা এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণাকালে আসামি অনিক চন্দ্র দাস উপস্থিত ছিলেন। দণ্ডিত অপর তিন আসামি পলাতক।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন রূপগঞ্জ উপজেলার মঙ্গলখালী এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে শাহীন (৩০), বলাইনগর এলাকার জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে আলমগীর (২২), বানিয়াদী এলাকার রাজকুমার দাসের ছেলে অনিক চন্দ্র দাস (২২) এবং একই এলাকার সন্তোষ চন্দ্র দাসের ছেলে আশিক চন্দ্র দাস (২৫)। বিচার চলাকালে মামলার আরেক আসামি একই উপজেলার মুড়াপাড়া নগর এলাকার মো. সুমন (৩১) মারা গেছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৫ জুন রাত আটটার দিকে উপজেলার বানিয়াদী ঋষিপাড়ার বাসা থেকে কাউকে কিছু না বলে বের হয়ে যায় স্কুলছাত্র জয়ন্ত চন্দ্র দাস। পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি। পরদিন ৬ জুন সকালে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি মুঠোফোনে ফোন করে জয়ন্তর বাবা শ্রী চৈতন্যকে জানান, তাঁর ছেলে জয়ন্তকে জীবন্ত ফেরত পেতে হলে পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে। কিন্তু পরে ওই মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর জানতে পারেন, আসামি শাহীন, আলমগীর, অনিক চন্দ্র দাসসহ অজ্ঞাতনামা চার থেকে পাঁচজন শ্রী চৈতন্যের বাড়ির সামনে থেকে তাঁর ছেলে জয়ন্তকে অপহরণ করে ঋষিপাড়া এলাকার মতি মিয়ার পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে জয়ন্তকে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ ঘরের ভেতরে রেখে তালাবন্ধ করে দেন। খবর পেয়ে স্বজনেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে হাত-মুখ বাঁধা অবস্থায় জয়ন্তর লাশ উদ্ধার করেন। এ ঘটনার পর শ্রী চৈতন্য বাদী হয়ে পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, স্কুলছাত্র জয়ন্ত হত্যা মামলার রায়ে চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণাকালে আসামি অনিক চন্দ্র দাস উপস্থিত ছিলেন। অপর তিন আসামি শাহীন, আলমগীর ও আশিক চন্দ্র দাস জামিনে পলাতক। তিনি বলেন, মামলার বিচারকাজ চলাকালে আরেক আসামি সুমন মারা গেছেন।