ঘটনার সময় আপনি কোথায় যাচ্ছিলেন?
মাসুমা: এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম।
কী দেখে বাড়িটির ভেতরে ঢুকলেন?
মাসুমা: দুজন নারীর চিৎকার শুনে।
গিয়ে কী দেখলেন?
মাসুমা: দেখলাম, ২০ থেকে ৩০ জন মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। তাঁরা কেউই রান্নাঘরের দিকে যেতে সাহস পাচ্ছেন না। কেউ ফায়ার সার্ভিসকে কল দিচ্ছেন। কেউ কেউ দৌড়াদৌড়ি করছেন। আমি গিয়ে গ্যাসের সিলিন্ডারের সুইচ বন্ধ করে দিই।
রান্নাঘরে যে গ্যাস বের হচ্ছে, তা বুঝলেন কীভাবে?
মাসুমা: গ্যাস বের হওয়ার শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল।
তারপর কী করলেন?
মাসুমা: দৌড়ে গিয়ে সিলিন্ডারের সুইচ বন্ধ করে দিলাম।
আপনি কীভাবে জানলেন সুইচ বন্ধ করতে হয়?
মাসুমা: আমাদের বাড়িতেও সিলিন্ডার গ্যাসে রান্না হয়। চুলার কাজ আমিই বেশি করি। তাই খুঁটিনাটি কিছু কাজ জানা ছিল। তাই সাহস করে গিয়ে সিলিন্ডারের সুইচ বন্ধ করেছিলাম।
সেখানে অনেকেই তো ছিলেন, আপনি সাহসটা পেলেন কী করে?
মাসুমা: দেখেন, রান্নাঘরের ভেতর গ্যাস ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু কোনো আগুন ধরেনি। দেখতে পেলাম সিলিন্ডার থেকে যে পাইপ বের হয়েছে, সেটার চুলার অংশে ফেটে জোরে শব্দ করে গ্যাস বের হচ্ছে। তাই ঝটপট সিলিন্ডারের সুইচ বন্ধ করে দিই। এটা সিম্পল (সাধারণ) বিষয় ছিল।
এটা সিম্পল বিষয় কীভাবে হলো? আগে কি কোথাও দেখেছেন বা জেনেছেন?
মাসুমা: হাইস্কুলে পড়ার সময় জেনেছি কীভাবে এসব কাজ করতে হয়। এমনকি এখন ইউটিউবে বা ফেসবুকেও বিভিন্ন ভিডিও থাকে, যেখানে বাসাবাড়িতে গ্যাসের চুলা থেকে গ্যাস বের হলে বা আগুন ধরলে কী করতে হয়, সেটা বলা হয়। সেটা একটু জানা ছিল।
ভয় পাননি?
মাসুমা: প্রথম দিকে একটু ভয় পেয়েছিলাম। তবে পরে আর লাগেনি। মনে মনে বলছিলাম, কোনোভাবেই ঘাবড়ানো যাবে না।
ফায়ার সার্ভিসের দল কি গিয়েছিল?
মাসুমা: হ্যাঁ। আমি সুইচ বন্ধ করে বের হয়ে আসার পরপরই সেখানে ফায়ার সার্ভিস দল পৌঁছায়।
আপনাকে কেউ কিছু বলেছে? ধন্যবাদ জানায়নি?
মাসুমা: (মৃদু হেসে) কেউ কোনো কিছু বলার আগেই চলে এসেছি। তবে সঙ্গে থাকা দুই বান্ধবী ধন্যবাদ জানিয়েছিল।
গ্যাসের চুলার বিষয়ে আরও সচেতনতা দরকার বলে মনে করেন?
মাসুমা: অবশ্যই। বর্তমানে এই সিলিন্ডার গ্যাস গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে চলে গেছে। কিন্তু দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কী করতে হয়, সেটা বাড়ির নারীদের অনেকেই অজানা। এটা জানানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। ছোটখাটো বিষয় থেকে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যায়।