গাড়িচাপায় অন্তঃসত্ত্বা কুকুরের মৃত্যু, দুজনকে আসামি করে মামলা

অন্তঃসত্ত্বা কুকুরটি ডিসি হিল এলাকায় থাকত। মৃত্যুর কয়েকদিন আগে কুকুরটির এই ছবি তুলেছেন স্থানীয় এক বাসিন্দা

চট্টগ্রামে ডিসি হিল এলাকায় পিকআপ ভ্যানের চাপায় অন্তঃসত্ত্বা এক কুকুরের মৃত্যুর ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছে। মামলায় ডিসি হিলের মূল ফটক দিয়ে বের হওয়া পিকআপ ভ্যানের চালক এবং নিরাপত্তাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। তবে আসামিদের নাম-ঠিকানা উল্লেখ করা হয়নি। আজ বুধবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তফার আদালতে মামলাটি করেন তোফায়েল আহমেদ নামের এক পরিবেশকর্মী।

বাদীর আইনজীবী নাজনীন জেনি প্রথম আলোকে বলেন, আদালত বাদীর বক্তব্য গ্রহণ করে কোতোয়ালি থানা-পুলিশকে তাঁর অভিযোগ এজাহার হিসেবে নিতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জড়িত আসামিদের পরিচয় শনাক্ত করে তাঁদের গ্রেপ্তার ও আদালতে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। নাজনীন জেনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন আইন এবং পশু হত্যার অভিযোগে দণ্ডবিধির ৪২৮ ধারায় মামলাটি করা হয়েছে।

মামলার বিবরণে বাদী উল্লেখ করেন, ৪ ডিসেম্বর রাত ১১টার পর ডিসি হিলের মূল ফটক দিয়ে এক সাদা রঙের পিকআপ ভ্যান বের হয়। তখন গেটের সামনে বসা ছিল একটি অন্তঃসত্ত্বা কুকুর। কুকুরটির বসা ছিল তা আগে থেকেই দেখেন ডিসি হিলের মূল ফটকে থাকা নিরাপত্তাকর্মী। তিনি কুকুরটিকে সরাননি, গাড়িচালককেও থামাননি। কুকুরটিকে চাপা দিয়ে গাড়িটি চলে যাওয়ার পরও নিরাপত্তাকর্মী কোনো পদক্ষেপ নেননি।

ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ৪৪ মিনিটে। পুরো ঘটনাটি ধরা পড়ে সিসিটিভি ক্যামেরায়, যা পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ১ মিনিট ৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, চট্টগ্রাম নগরের ডিসি হিলের মূল ফটক দিয়ে বের হয় একটি সাদা রঙের পিকআপ ভ্যান। ঠিক সেই সময় ফটকের সামনে বসে ছিল একটি কুকুর। গাড়িটি থামেনি। ধীরগতিতে এসে সেটি সরাসরি কুকুরটির গায়ের ওপর দিয়েই চলে যায়। কুকুরটি ছটফট করতে থাকে, পেছনে দৌড়ে আসে আরও দুটি কুকুর।

জানা গেছে, ডিসি হিলে সরকারি শীর্ষ দুই কর্মকর্তা চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের বাসভবন। পথচারী ও এলাকার বাসিন্দারা ওই এলাকায় হাঁটতে যান। তবে ওই রাতে ডিসি হিলের প্রধান ফটক বন্ধ ছিল। গাড়িটি বের হওয়ার আগে নিরাপত্তাকর্মী ফটক খুলে দিন।

সম্প্রতি পাবনার ঈশ্বরদীতে আটটি কুকুরছানাকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে সমালোচনা হয়। সেখানে উপজেলা কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুল রহমানের সরকারি বাসভবনে জন্মানো ছানাগুলোকে বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে হত্যা করা হয়। অভিযোগের পর হাসানুলের স্ত্রী নিশি রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার করা মামলায় তাঁকে আদালত জেলহাজতে পাঠান।