চুরি করে পালানোর সময় ধরা পড়েন গৃহকর্মী, পরে মা-মেয়েকে হত্যা করেন: পুলিশ
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসা থেকে স্বর্ণালংকার ও মালামাল চুরি করে পালানোর সময় গৃহকর্মী আয়েশা আক্তারকে (২০) ধরে ফেলেন গৃহকর্ত্রী লায়লা আফরোজা (৪৮)। লায়লা ও তাঁর মেয়ে নাফিসা নাওয়াল বিনতে আজিজের (১৫) সঙ্গে তাঁর ধস্তাধস্তি হয়। তখন ছুরি দিয়ে তাঁদের দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করেন তিনি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গৃহকর্মী এমন তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আজ বুধবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সহিদুল ইসলাম।
এর আগে আজ সকালে আয়েশাকে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার কয়ারচর থেকে স্বামী জামাল সিকদারসহ (২৫) গ্রেপ্তার করে মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ। জামাল একই এলাকার বাসিন্দা ও আয়েশা আক্তার নরসিংদীর সলিমগঞ্জ এলাকার রবিউল ইসলামের মেয়ে।
পুলিশের দাবি, মোহাম্মদপুরে ওই হত্যাকাণ্ডের পর আয়েশা স্বামীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি কয়ারচরে যান।
এসআই সহিদুল ইসলাম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আয়েশাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা জানিয়েছেন, লায়লা ও তাঁর মেয়েকে তিনি কুপিয়ে হত্যা করেছেন। এ বিষয়ে আয়েশা ও তাঁর স্বামীকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এদিকে আয়েশার স্বামী জামাল সিকদারের বরাতে পুলিশ জানায়, মা-মেয়েকে হত্যার উদ্দেশ্য ছিল না আয়েশার। স্বর্ণের গয়না ও কিছু মালামাল নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় আয়েশাকে পেছন থেকে ধরে ফেলেন লায়লা। ধরা পড়ার ভয়ে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করেন আয়েশা।
মা-মেয়েকে হত্যার ঘটনায় গত সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করা হয়। মামলার বাদী আ জ ম আজিজুল ইসলাম। তিনি লায়লার স্বামী ও নাফিসার বাবা। মামলায় উল্লেখ করা হয়, সোমবার সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, গত সোমবার এই হত্যাকাণ্ডের মাত্র চার দিন আগে বাসাটিতে গৃহকর্মীর কাজ নেন গ্রেপ্তার নারী। প্রতিদিনই ওই গৃহকর্মী বোরকা পরে নয়তো মুখমণ্ডল ঢেকে বাসাটিতে আসা-যাওয়া করেছিলেন। ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার দিন ওই গৃহকর্মী বোরকা পরে বাসায় যান। আর বাসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর পরনে ছিল নিহত নাফিসার স্কুল ড্রেস।