মুন্সিগঞ্জে সেতু ভেঙে খালে পড়ল ঠিকাদারের মালবাহী ট্রাক

বেইলি সেতুর ওপর দিয়ে মালবাহী ট্রাক পার হওয়ার সময় ট্রাকসহ ভেঙে পড়ে সেতুটি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মুক্তারপুর-সিপাহিপাড়া সড়কের বণিক্যপাড়া এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মুক্তারপুর-সিপাহিপাড়া সড়কে মালবাহী ট্রাক পার হওয়ার সময় ট্রাকসহ একটি বেইলি সেতু ভেঙে খালে পড়ে গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ট্রাকের চালক ও তাঁর সহকারী। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত একটার দিকে উপজেলার বণিক্যপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় লোকজন জানান, গভীর রাতে ওই সেতুর পাশে নির্মাণাধীন একটি কালভার্টের নির্মাণসামগ্রী নিয়ে মুক্তারপুর থেকে ঠিকাদারদের একটি ট্রাক বণিক্যপাড়া এলাকায় আসছিল। এ সময় মালবাহী ট্রাকটি বেইলি সেতু পার হওয়ার সময় বিকট শব্দে সেতু ভেঙে খালে পড়ে। এতে ট্রাকের চালক ও তাঁর সহকারী আহত হন। তাঁরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়ে নিজেদের বাড়ি চলে যান।

এই পথে যাতায়াতকারী স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, মুক্তারপুর-সিপাহিপাড়া সড়কটি মুন্সিগঞ্জের অন্যতম ব্যস্ত সড়ক। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন ছোট-বড় মিলিয়ে হাজারো যানবাহন চলাচল করে। তাই সড়কটির এ অংশের বণিক্যপাড়া এলাকার খালের ওপরে পাশাপাশি দুটি বেইলি সেতু নির্মাণ করা হয়। ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে কয়েক বছর ধরেই নড়বড়ে হয়ে উঠেছিল সেতু দুটি। তাই গত বছর বর্তমানে সেতুটির পাশেই একটি কংক্রিটের কালভার্ট নির্মাণ করছিল মুন্সিগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। কালভার্ট নির্মাণের আগেই ভেঙে পড়ল সেতুটি। অন্য বেইলি সেতুটিও ঝুঁকির মধ্যে আছে।

সেতু ভেঙে পড়ার পর আজ সকাল থেকে মুন্সিগঞ্জের ব্যস্ততম মুক্তারপুর-সিপাহিপাড়া সড়কে ছিল দীর্ঘ যানজট। এ পথে যাতায়াতকারীদের পড়তে হয় চরম বিড়ম্বনায়।
শরিফুল ইসলাম নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, তিনি জরুরি প্রয়োজনে এ পথে শ্রীনগরে যাচ্ছিলেন। এসে দেখেন একটি সেতু ভাঙা। অন্য সেতুতে যানজটে গাড়ি চলাচল বন্ধ। পরে তিনি বণিক্যপাড়া থেকে সিপাহিপাড়া মোড় পর্যন্ত দুই কিলোমিটার হেঁটে গিয়ে অটোরিকশায় করে শ্রীনগরে পৌঁছান।

অটোরিকশার চালক আশরাফুল ইসলাম জানান, আজ সকাল আটটার দিকে মাওয়া যাওয়ার জন্য মুক্তারপুর থেকে যাত্রী নিয়ে রওনা দেন তিনি। বণিক্যপাড়ায় এসে দীর্ঘ যানজটে পড়েন। তিনি বলেন, আধঘণ্টা যানজটে আটকে ছিলাম। গাড়ি সামনেও যাচ্ছিল না, পেছনেও না। একপর্যায়ে যাত্রীরা বিরক্ত হয়ে গাড়ি থেকে নেমে চলে যান। তবে বেলা ১১টার পর যানজট কমে যায়।

মুন্সিগঞ্জ সড়ক ও জনপথের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আবুল কাশেম মোহাম্মদ নাহীন রেজা প্রথম আলোকে বলেন, ভেঙে পড়া বেইলি সেতুর পাশে নির্মাণাধীন কালভার্টের একটি অংশ কিছুদিনের মধ্যে খুলে দেওয়ার কথা ছিল। তবে আজ সকালে সড়কে কিছুটা যানজট হওয়ায় ১০টার দিকে কালভার্টটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সড়কটিতে কোনো যানজট নেই।

সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী আরও বলেন, যে বেইলি সেতু ভেঙে পড়েছে, সেটি সরিয়ে নেওয়া হবে। এ অংশে সড়কের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ২২ মিটার প্রস্থের কংক্রিটের কালভার্ট তৈরি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৯ মিটার তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। বাকি অংশের কাজও দ্রুত শুরু হবে। ঠিকাদারের মালামালবাহী ট্রাকের কারণে বেইলি সেতুটি ভেঙেছে। সরকারের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, সেটি হিসাব করে ঠিকাদারের কাছ থেকে আদায় করা হবে।