চট্টগ্রামে ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে হামলা, গ্রেপ্তার এক আসামির জামিন

গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে শাহবাগবিরোধী ঐক্যের ব্যানারে হামলায় আহত সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নগর শাখার সভাপতি রিপা মজুমদার। গতকাল বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম নগরের জামালখান এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রামে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় করা পুলিশের মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামির একজন জামিন পেয়েছেন। তাঁর নাম ওবাইদুর রহমান। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর সিদ্দিক শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। আরেক আসামি মো. সেলিমের জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন আদালত।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কোতোয়ালি থানায় পুলিশের করা দ্রুত বিচার আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামিকে আদালতে হাজির করা হলে তাঁদের জামিনের আবেদন করেন আইনজীবীরা। এর মধ্যে ওবাইদুর রহমান নামের এক আসামি বেসরকারি বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের অষ্টম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। বর্তমানে তাঁর পরীক্ষা চলায় জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাসের প্রতিবাদে গতকাল বুধবার বিকেলে কর্মসূচি ঘোষণা করে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। কর্মসূচি শুরুর পরপর সেখানে মিছিল নিয়ে আসে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য’। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। এ সময় ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যে’র লোকজন ছাত্র জোটের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালান। এতে ১২ জন আহত হন।

এ হামলার সময় ঘটনাস্থল থেকে ওবাইদুর ও সেলিমকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দ্রুত বিচার আইনে আটক দুজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ২০ জনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করে। এতে বলা হয়, আসামিরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্য আকস্মিক ও দলবদ্ধভাবে রামদা, লোহার খন্তা নিয়ে এলাকায় মহড়া দিয়ে জনমনে আতঙ্ক, ত্রাস ও রাস্তায় যান চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে।

আটক দুজনের মুক্তির দাবিতে গতকাল এশার নামাজের পর কর্মসূচি ঘোষণা করেন ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যে’র নেতা-কর্মীরা। তবে ব্যানারে তাঁদের নাম ইংরেজিতে ‘অ্যান্টি-শাহবাগ মুভমেন্ট’ লেখা ছিল। গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে নগরের কোতোয়ালি থানার সামনে অবস্থান নেন তাঁরা। রাত ১১টা পর্যন্ত তাঁরা সেখানে অবস্থান করেন। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে চলে যান তাঁরা।

এদিকে গতকালের হামলার ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে এক নারীসহ দুজনকে পেছন থেকে এক ব্যক্তিকে লাথি মারতে দেখা যায়। যে ব্যক্তিকে লাথি মারতে দেখা গেছে, তিনি ছাত্রশিবিরের সাবেক কর্মী বলছেন ছাত্র জোটের নেতা-কর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা। তিনি ‘শিবির ক্যাডার’ হিসেবে পরিচিত বলছেন তাঁরা।

তবে ছাত্রশিবির বলছে, তিনি শিবিরের দায়িত্বশীল কোনো পদে নেই। শিবিরের কেউ এ কাজে জড়িত নন। ১৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিও দেখা যায়, হামলার পর প্রেসক্লাবের পাশে একটি ভবনের নিচে আশ্রয় নেন গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের নেতা-কর্মীরা। সেখানে একজন পুলিশ সদস্যকেও দেখা গেছে। ওই ব্যক্তি পুলিশের চোখ এড়িয়ে নেতা-কর্মীদের পেছন যান। সেখানে দাঁড়িয়ে হঠাৎ একজনকে লাথি মারেন তিনি। এরপর ঘুরে আবার আরেক নারীকে লাথি মারেন।