ভালোবাসা দিবসে ফুটপাত থেকে ফুল বিক্রেতাদের সরিয়ে দিল প্রশাসন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের জেলা সাব–রেজিস্ট্রার কার্যালয় সংলগ্ন ফুটপাত দখলমুক্ত করতে অভিযান চালান ভ্রাম্যমান আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে অভিযান চালিয়ে ফুল বিক্রেতাদের সরিয়ে ফুটপাত দখলমুক্ত করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় দুই ফুল বিক্রেতাকে সাত দিনের কারাদণ্ডসহ এক হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। মঙ্গলবার বেলা দুইটার দিকে শহরের জেলা সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়–সংলগ্ন ফুটপাতে এ অভিযান চালান জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা।

পয়লা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবসের দিনই কেন এ অভিযান চালানো হলো, এ প্রশ্নের জবাবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ধারাবাহিক অভিযানের অংশ হিসেবে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। কোনো দিবসকে প্রাধান্য দিয়ে নয়।

কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন জেলা শহরের কাজীপাড়ার বাসিন্দা উত্তম কর্মকার (৪০) ও মধ্যপাড়ার বাসিন্দা রাজু মালাকার। প্রত্যেককে সাত দিন কারাদণ্ড ও এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং তা অনাদায়ে আরও তিন দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বাকি ব্যবসায়ীরা অভিযানের সময় পালিয়ে যান।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, জেলা শহরের হাসপাতাল সড়কের জেলা সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়–সংলগ্ন ফুটপাত দখল করে দীর্ঘদিন ধরে ফুল বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। এতে শহরের মানুষ এই ফুটপাত দিয়ে চলাফেরা করতে পারেন না। বছরের পর বছর এই ফুটপাত ফুল বিক্রেতাদের দখলে রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার তাঁদের ফুটপাত ছেড়ে উঠে যেতে বলা হয়।

মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়–সংলগ্ন ফুটপাত দখলমুক্ত করতে ফুল বিক্রেতাদের নির্দেশ দেন। কিন্তু দুপুর পর্যন্ত তাঁরা সরেননি। বেলা দুইটার দিকে অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা। এ সময় কয়েক ফুল বিক্রেতা পালিয়ে যান। আর উত্তম কর্মকার ও রাজু মালাকারকে আটক করে সাজা দেওয়া হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্দেশে ফুটপাত থেকে ফুল বিক্রেতাদের সব সরঞ্জাম ও ফুল গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়। ফুটপাত পরিষ্কারের পর সাধারণ মানুষ ওই ফুটপাত দিয়ে চলাচল শুরু করেন।

এ বিষয়ে এক কলেজছাত্রী বলেন, আজ পয়লা ফাল্গুন আর বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। এদিনে অনেক মানুষ ফুল কিনতে আসেন। তিনিও এসেছিলেন। পরে দেখেন, এখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালাচ্ছেন।

ফুল ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদের পর ফুটপাত দিয়ে লোকজন চলাচল শুরু করেন
ছবি: প্রথম আলো

স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, তাঁরা এ ফুটপাত দিয়ে এখন চলাচল করতে পারছেন, এটা স্বস্তির বিষয়। দীর্ঘদিন এ ফুটপাত ফুল বিক্রেতাদের দখলে ছিল। সড়কে গাড়ির ভিড় জমে গেলে তাঁদের যাতায়াতে সমস্যা হতো।

রিন্টু বিকাশ চাকমা বলেন, জেলা প্রশাসক মো. শাহ্গীর আলমের নির্দেশে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে এখানে অভিযান চালানো হয়েছে। ফুটপাতটি দীর্ঘদিন ধরে ফুল বিক্রেতাদের দখলে রয়েছে। অভিযানের সময় দণ্ডবিধি ১৮৬০ অনুযায়ী দুই ফুল বিক্রেতাকে সাত দিন করে কারাদণ্ড ও এক হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। ফুলগুলো পচনশীল। তাই এগুলো ধ্বংস করা হয়েছে।