মেহেরপুরে নিখোঁজ চিকিৎসক নেত্রকোনায় অচেতন অবস্থায় উদ্ধার

মেহেরপুরে নিখোঁজ চিকিৎসক ফরহাদ পারভেজকে তিন দিন পর অজ্ঞান অবস্থায় নেত্রকোনায় উদ্ধার করা হয়েছে
ছবি: সংগৃহীত

মেহেরপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার পর থেকে নিখোঁজ চিকিৎসক ফরহাদ পারভেজকে (৩০) নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রায় অচেতন অবস্থায় তাঁকে স্বজনেরা উদ্ধার করেন। এর আগে গতকাল বুধবার রাতে এক ব্যক্তি ফরহাদকে অচেতন অবস্থায় ওই হাসপাতালে ভর্তি করেন।

চিকিৎসক ফরহাদ পারভেজ মেহেরপুর সদর হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। বিসিএস ৪২ ব্যাচের ওই চিকিৎসকের বাড়ি যশোরের চৌগাছা উপজেলার দিঘল সিংগা গ্রামে। তাঁর বাবা নজরুল ইসলাম একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। ফরহাদ পারভেজ দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন।

মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও ফরহাদ পারভেজের সহপাঠী শাহরিয়ার জাহান ওসমানী জানান, ফরহাদ পারভেজ ও তিনি একসঙ্গে মেডিকেলে পড়েছেন। গতকাল রাত নয়টার দিকে মোহনগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে ওষুধ কোম্পানির একজন বিক্রয় প্রতিনিধি তাঁকে অচেতন অবস্থায় মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। পরে তাঁকে ভর্তি ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার পর পরিবারের লোকজনকে বিষয়টি জানানো হয়।

শাহরিয়ার আরও জানান, আজ বিকেলে ফরহাদের বাবা ও ভাই তাঁকে নিতে এসেছেন। ফরহাদের এখন কিছুটা জ্ঞান ফিরেছে। তবে তাঁর সঙ্গে ঠিক কী ঘটেছিল, এটা এখনো মনে করতে পারছেন না। ধারণা করা হচ্ছে, যাত্রাপথে কেউ হয়তো খাবারের সঙ্গে নেশাজাতীয় বা অজ্ঞান হওয়ার মতো কোনো দ্রব্য খাইয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরহাদকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

আজ বেলা পৌনে তিনটার দিকে ফরহাদ পারভেজের ঘুমের ঘোর কিছুটা কাটলে সাংবাদিকদের তিনি জানান, গত সোমবার মেহেরপুর হাসপাতালে তাঁর ডিউটি না থাকায় তিনি ঢাকার উদ্দেশে বের হন। এ সময় গাড়িতে চা-নাশতা খেয়েছিলেন। তারপর এই দুই দিন কোথায় ছিলেন, এটা মনে করতে পারছেন না। এমনকি মোহনগঞ্জ কীভাবে এলেন, সেটাও তিনি জানেন না।

ফরহাদ পারভেজের বড় ভাই স্কুলশিক্ষক রায়হান পারভেজ বলেন, ‘আমরা যশোরে থাকি। আর ফরহাদ তার কর্মস্থল মেহেরপুরে থাকে। সোমবার রাত থেকে তার মুঠোফোন বন্ধ পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। কিন্তু কোথায়ও কোনো তথ্য পাইনি। পরে বুধবার রাতে মোহনগঞ্জ হাসপাতালের চিকিৎসক শাহরিয়ার জাহান ওসমানী ফোন করে আমাদের বিষয়টি জানান।’

মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে একজন চিকিৎসক অজ্ঞান অবস্থায় ভর্তি হওয়ার খবর শুনেছেন তিনি। পরে মেহেরপুর সদর থানার সঙ্গে কথা হয়েছে। পরিবারের লোকজন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছেন।