৩৩ বছর ধরে বাড়িতে রাখা গ্রেনেডটি অবশেষে বিস্ফোরণের মাধ্যমে ধ্বংস

মাদারীপুরের শিবচর থেকে উদ্ধার হওয়া গ্রেনেড ধ্বংস করা হয়েছে। এ সময় বিকট শব্দে গ্রেনেডটি বিস্ফোরিত হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে শিবচর থানার সামনের পরিত্যক্ত বালুর মাঠে
ছবি: সংগৃহীত

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় ৩৩ বছর ধরে খেলনা বল মনে করে ঘরে রাখা গ্রেনেডটি বিস্ফোরণের মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে শিবচর থানার সামনের একটি পরিত্যক্ত জায়গায় ৩ ফুট গর্ত করে গ্রেনেডটি ধ্বংস করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম বোম ডিসপোজাল ইউনিট।

এর আগে গত ২ জুলাই রাতে উপজেলার সন্ন্যাসীর চর ইউনিয়নের রাজারচর এলাকার ইজিবাইকচালক জয়নাল আবেদিনের ঘরের শোকেসের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয় দুই ইঞ্চির গ্রেনেডটি। এ নিয়ে প্রথম আলো অনলাইনে গত ৪ জুলাই ‘খেলনা মনে করে ৩৩ বছর ধরে বাড়িতে রাখা হয়েছিল গ্রেনেড’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।

থানা-পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৯৯০ সালের দিকে জয়নাল আবেদিনের বাবা মৃত জহের উদ্দিন মুনশি পুকুর খনন করতে গিয়ে একটি বলসদৃশ একটি গ্রেনেড পান। পরে এটি খেলনা মনে করে ঘরে রেখে দেন। বাড়ির শিশুরা গ্রেনেডটি খেলনা মনে করে প্রায়ই খেলত। জয়নালের ছেলে জোবায়েরও গ্রেনেডটি দিয়ে খেলা করত।

সম্প্রতি জোবায়ের তার মামাবাড়ি গিয়ে মামা বাবু মোল্লার সঙ্গে একটি সিনেমা দেখার সময় একটি দৃশ্যে গ্রেনেড দেখতে পায়। এ সময় ওই কিশোর মামাকে জানায়, তাদের বাড়িতেও এ ধরনের একটি বস্তু আছে। বাবু মোল্লা বিষয়টি প্রথমে গুরুত্ব দেননি। পরে ভাগনের পীড়াপীড়িতে বাবু তাঁর বোনের বাড়িতে যান এবং সেখানে ঘরের আঙিনায় গ্রেনেডটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে গ্রেনেডটি তিনি ঘরের শোকেসের মধ্যে নিয়ে রাখেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি শিবচর থানার পুলিশকে জানান। পরে ২ জুলাই রোববার রাত ১১টার দিকে পুলিশ গিয়ে ঘরের শোকেস থেকে গ্রেনেডটি উদ্ধার করে।

আরও পড়ুন

পরে গ্রেনেডটি থানার হেফাজতে রাখা হয়। গ্রেনেডটি দুই ইঞ্চি লম্বা ও পিনযুক্ত। দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত থাকায় গ্রেনেডটি বিভিন্ন অংশে মরচে পড়ে যায়। গ্রেনেড উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো মামলা করা হয়নি। তবে ৩ জুলাই গ্রেনেডটি ধ্বংস করার জন্য প্রক্রিয়া শুরু করে। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে আদালত গ্রেনেডটি ধ্বংস করতে রাজধানী ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম বোম ডিসপোজাল ইউনিটকে নির্দেশ দেন। পরে শিবচর থানা-পুলিশের সহযোগিতায় বোম ডিসপোজাল ইউনিটের বিশেষজ্ঞরা গ্রেনেডটি ধ্বংস করেন।

এ সম্পর্কে শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, উদ্ধার গ্রেনেডটি আদালতের নির্দেশনা মেনে বিস্ফোরণের মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়েছে। পরিত্যক্ত গ্রেনেডটি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। বোম ডিসপোজাল ইউনিটের বিশেষজ্ঞরা সফলভাবে গ্রেনেডটি ধ্বংস করতে সক্ষম হন।