খালি পড়ে আছে কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের শেড
ছবি: প্রথম আলো

উদ্বোধনের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও চালু হয়নি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় মহিপুরে ‘মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র’। স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে মৎস্য আহরণ, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটি  নির্মাণ করা হয়। তবে সব ব্যবসায়ী এবং নৌযানের স্থানসংকুলান না হওয়ায় ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কেন্দ্রটি কাজে আসছে না। এতে কেন্দ্রটি চালু করতে না পারায় সরকার বছরে অন্তত ৫ কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন ২০১২ সালে উপকূলীয় পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মহিপুর মৎস্য বন্দরের মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। চার বছর পর ২০১৬ সালে মহিপুর মৎস্য বন্দরের পশ্চিমে ১০৯ শতাংশ জমির ওপর নির্মাণ করা হয় এই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে আনুষঙ্গিক সুবিধাসহ এই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র নির্মাণ করেছে। 

এখানে ট্রলার থেকে মাছ নামানোর জন্য পন্টুন ও গ্যাংওয়ে, এক হাজার বর্গফুটের অকশন শেড এলাকা, প্যাকেজিং এলাকা, আড়তদার কক্ষ, বরফকল, জেনারেটর কক্ষ, অফিস ভবন, পয়োনিষ্কাশনের সুবিধাসহ মাছ পরিবহনের জন্য সাত হাজার বর্গফুটের একটি ট্রাকস্ট্যান্ড, নির্মাণ হয়েছে আবাসিক কোয়ার্টার। লোকবল নিয়োগ হয়েছে সাতজন। এর মধ্যে তিনজন কর্মকর্তা, দুজন অপারেটর ও দুজন প্রহরী।

২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটির উদ্বোধন করেন।      

মহিপুর মৎস্য আড়তদার মালিক সমিতির সভাপতি দিদার উদ্দিন আহমেদ বলেন, আসলে মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটিতে ৪৫ জন ব্যবসায়ীর কার্যক্রম পরিচালনার সক্ষমতা থাকলেও মহিপুরে রয়েছেন ৮২ জন নিবন্ধিত ব্যবসায়ী। এ ছাড়া মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের যে পন্টুন দেওয়া হয়েছে সেখানে মাত্র ২০টি ট্রলার রাখা যায়। কিন্তু ৮২ জন ব্যবসায়ীর দুই হাজারের বেশি ট্রলার রয়েছে। এ ছাড়া পাইকার আছেন ২০০ ও শ্রমিক রয়েছেন ৮০০ জন। তাই এত মানুষ ও নৌযানের স্থানসংকুলান না হওয়া অবতরণ কেন্দ্রটিতে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালাতে পারছেন না মহিপুরের মৎস্য ব্যবসায়ীরা।

মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক মো. শাকিল আহমেদ বলেন, মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ২০০৯ সালে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছিল, তখন এখানে কমসংখ্যক মৎস্য ব্যবসায়ী ছিলেন। কিন্তু যখন এটি ২০২১ সালে চালু করা হলো, তখন এখানে অনেক ব্যবসায়ী। এখন কীভাবে এর পরিধি বাড়ানো যায়, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।