ঘিওরে নদীভাঙনে দেবে গেছে বেইলি সেতুর একাংশ, যান চলাচল বন্ধ

ইছামতী নদীর ভাঙনে বেইলি সেতুটি ধসে গেছে। এতে গত বুধবার থেকে ঘিওর-শ্যামগঞ্জ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুরে মানিকগঞ্জের ঘিওরের কুস্তা এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

ইছামতী নদীর ভাঙনের কারণে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় কুস্তা এলাকায় বেইলি সেতুর একাংশ দেবে গেছে। এতে ঘিওর-শ্যামগঞ্জ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন ঘিওর ও দৌলতপুর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রামের বাসিন্দারা।

স্থানীয় লোকজন জানান, এক সপ্তাহ আগে সেতুটির পূর্ব পাশের অংশে ধস শুরু হয়। এরপর গত বুধবার থেকে সেতুটি দিয়ে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া নদীভাঙনের কারণে ঘিওরের কুস্তা এলাকায় নদীতীরবর্তী শতবর্ষী ঘিওর হাট, অর্ধশত বসতবাড়ি, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, উপজেলা খাদ্যগুদাম, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, কবরস্থানসহ বিভিন্ন স্থাপনা হুমকির মধ্যে পড়েছে। নদীর ভাঙনের ফলে গত দুই সপ্তাহে নদীতীরবর্তী প্রায় ৩০টি বসতবাড়ি ভেঙে গেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মানিকগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, ঘিওরে কুস্তা এলাকায় নদীর ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে বালুভর্তি আট হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। পরে ভাঙন রোধে স্থায়ী প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যানবাহন চলাচল এবং মানুষজনের চলাচলের জন্য দ্রুত সেতুটি পুনর্নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে কাজ ‍শুরু হয়েছে।
সাজ্জাকুর রহমান, প্রকৌশলী, ঘিওর উপজেলা এলজিইডি

আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুটির মেরামতকাজ শুরু হয়েছে। স্টিলের পাটাতন খোলার কাজ করছেন শ্রমিকেরা। ঘিওর হাটসংলগ্ন ইছামতী নদীর ওপর এই বেইলি সেতুটির পূর্ব পাশের অংশ ধসে গেছে। সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী চলাচল বন্ধ রয়েছে।

দুই সপ্তাহ ধরে মানিকগঞ্জের ঘিওরে ইছামতী নদীতে প্রবল ভাঙন শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুরে উপজেলার কুস্তা এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘিওর উপজেলার কুস্তা, নারচি, বেগুন নারচি, শোলাকুড়া গ্রাম এবং দৌলতপুর উপজেলার খলসি, জিয়নপুর, বাচামারা, বাঘুটিয়া ইউনিয়নের ১৫-১৬টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ এই সেতু দিয়ে ঘিওর উপজেলা সদর ও জেলা সদরে যাতায়াত করতেন। যোগাযোগব্যবস্থা সচল রাখতে সেতুটি মেরামতসহ ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান এলাকাবাসী।

ঘিওর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান অহিদুল ইসলাম টুটুল বলেন, জেলার অন্যতম বৃহত্তর ঘিওর হাটের একাংশ ধসে গেছে। ৩০টির বেশি বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নদীভাঙনে সেতুটি ধসে যাওয়ায় শুধু যানবাহন চলাচল বন্ধই হয়নি, শতাধিক বছরের ঘিওর হাটবাজারে মালামাল আনা-নেওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন ব্যবসায়ী ও কৃষকেরা। জরুরি ভিত্তিতে সেতুটি মেরামত করা প্রয়োজন।

ঘিওর হাটবাজার পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন মুসা বলেন, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে নদীভাঙনে হাটের বেশ কিছু অংশ (গরুর হাট) নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সেতু ধসে যাওয়ায় তাঁর মতো হাজারো মানুষ উপজেলা সদরে যাতায়াতে বিড়ম্বনায় পড়েছেন।

জানতে চাইলে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী সাজ্জাকুর রহমান বলেন, যানবাহন চলাচল এবং মানুষজনের চলাচলের জন্য দ্রুত সেতুটি পুনর্নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে কাজ ‍শুরু হয়েছে।