বেলকুচিতে শ্রমিক লীগের কমিটি বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে মাদক মামলার আসামিকে সাধারণ সম্পাদক করে জাতীয় শ্রমিক লীগের উপজেলা কমিটি গঠন করায় ওই কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন পদবঞ্চিত নেতা–কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা এ দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয় শ্রমিক লীগ বেলকুচি উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ও সাবেক কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোতালেব হোসেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ছয় বছর আগে সম্মেলনের মাধ্যমে জাতীয় শ্রমিক লীগ বেলকুচি উপজেলা শাখার কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির অনেক নেতা-কর্মী এখন নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ায় সম্প্রতি নতুন করে বেলকুচি উপজেলা শাখায় সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু সম্মেলন না করেই শ্রমিক লীগ সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার নেতারা সাহেব আলীকে সভাপতি ও ফরহাদ আলীকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০ নভেম্বর বেলকুচি উপজেলা কমিটি অনুমোদন দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্য বক্তারা বলেন, নবগঠিত কমিটিতে মাদকসেবী, মাদক ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ ও সংগঠনবিরোধীদের স্থান দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ আলী একজন মাদকসেবী। মাদক সেবনের ঘটনায় পুলিশ তাঁকে একাধিকবার আটক করেছে। ২০১৯ সালের ১৬ অক্টোবর তাঁর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়।
বক্তারা আরও বলেন, তাঁরা নবগঠিত এই পকেট কমিটি বাতিল করে নতুন সম্মেলন চান, সম্মেলনের মাধ্যমে স্বচ্ছতার সঙ্গে কমিটি গঠন করার দাবি জানান। এ দাবি মানা না হলে তাঁরা নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় শ্রমিক লীগ বেলকুচি উপজেলা শাখার সদস্য ফিরোজ সেখ, আবদুল্লাহ, মানিক মিয়া, রহমত আলী, সামিউল ইসলাম, মাজেম আলী, অলি আহম্মেদ, মো. আলহাজ, রকিব উদ্দিন, আবুল কালাম আজাদ, হিরা জুয়েল, উপজেলা ভ্যান রিকশা মালিক সমিতির সভাপতি কোরবান আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মাদক সেবন ও মাদক মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় শ্রমিক লীগ বেলকুচি উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ আলী বলেন, তাঁকে সন্দেহজনকভাবে মাদক মামলায় আটক করেছিল পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে একটি মহল উদ্দেশ্যমূলক ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে।
পকেট কমিটি গঠন ও মাদকাসক্ত ব্যক্তি ও মাদক ব্যবসায়ীদের নিয়ে কমিটি গঠনের বিষয়ে জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের বলেন, উপজেলা শ্রমিক লীগের কার্যকরী কমিটির কার্যবিবরণীর মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়টিতে জেলা আওয়ামী লীগ ও বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগ জানে। এ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাদক সেবন করেন বা পুলিশ তাঁকে আটক করেছিল, সে বিষয়গুলো তাঁরা জানেন না। এ ধরনের অভিযোগের সত্যতা থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশানুর বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা সংবাদ সম্মেলন করেছেন, তাঁরা আসলে শ্রমিক লীগের কেউ নন। একটি মহল নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে এমন অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করছেন।