জমি বিক্রি ও বন্ধক রেখে নির্বাচন করতে চাওয়া মওলাদের মনোনয়নপত্র বাতিল

মেহেরপুর–১ আসনে মনোনয়নপত্র বাতিলের পর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মওলাদ আলী খান। আজ রোববার দুপুরেছবি: প্রথম আলো

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মেহেরপুর–১ (সদর–মুজিবনগর) আসনে জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন মওলাদ আলী খান। কিন্তু মনোনয়নপত্রে ত্রুটি থাকায় যাচাই–বাছাইয়ে বাতিল ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র যাচাই–বাছাইপ্রক্রিয়া চলে।

মনোনয়নপত্র বাতিলের পর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মওলাদ আলী খান বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ নিতে আমি আমার কৃষিজমির ১০ কাটা বিক্রি করেছি। আরও দুই বিঘা বন্ধক রেখেছি। এর পরও সামান্য ভুলের জন্য আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে কমিশন। আমি এখন আপিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শামীম হাসান বলেন, মওলাদ আলী খানের প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারী স্বাক্ষরের জায়গায় একই ব্যক্তির স্বাক্ষর থাকায় তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তবে মনোনয়ন ফেরত পাওয়ার জন্য তাঁর আপিল করার সুযোগ রয়েছে।

মওলাদ আলী খানের গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামে। তিনি দীর্ঘদিন থেকে জাতীয় পার্টির (জেপি) নেতা হিসেবে এলাকায় রাজনীতি করেন। সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এলাকায় তাঁর তৎপরতার কথা জানিয়েছেন গ্রামের মানুষ। দারিয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা আবু আনসার বলেন, মওলাদ আলী খান নিরেট ভালো মানুষ। গ্রামের মানুষের নানা সমস্যায় তিনি সাহায্য-সহযোগিতা করেন।

দুই আসনে আটজনের মনোনয়নপত্র বাতিল
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, মেহেরপুর-১ আসনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন ১০ জন। এর মধ্যে তিনজনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী ইয়ারুল ইসলাম, আরেক সহসভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী মিয়াজান আলী ও জাতীয় পার্টির (জেপি) মওলাদ আলী খান।

মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়নাল আবেদিন, জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী জাতীয় পার্টির জেলা সভাপতি আব্দুল হামিদ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) জেলা সভাপতি তরিকুল ইসালম, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট সদস্য বাবুল জোম ও জাকের পার্টির জেলা সভাপতি সাইদুল আলমের।

মেহেরপুর–২ (গাংনী) আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন ১৪ জন। এর মধ্যে পাঁচ স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। তাঁরা হলেন গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আশরাফুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম ও রাশেদুল হক।

এই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবু সালেহ নাজমুল হকসহ ৯ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। অন্য প্রার্থীরা হলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পুলিটব্যুরো সদস্য নুর আহমেদ বকুল, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন, জাতীয় পার্টির (জাপা) কেতাব আলী, জাকের পার্টির মোহা. সামসুদ্দোহা, সাবেক সংসদ সদস্য তৃণমূল বিএনপির আবদুল গণি, বাংলাদেশ কংগ্রেসের আল ফারুক, গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাইদুজ্জামান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির গোলাম রসুল ও সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. শাহজালাল।