তিস্তার চরে অটোরিকশাচালক বন্ধুকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ, বন্ধু গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার
প্রতীকী ছবি

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার তিস্তার চরে বেড়াতে গিয়ে রফিকুল ইসলাম (২২) নামের এক অটোচালককে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বন্ধুর বিরুদ্ধে। গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী তিস্তা নদীর চরে এ ঘটনা ঘটে। হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত বন্ধু আইউব আলীকে (২৬) রাতেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নিহত রফিকুল ইসলাম দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের চিলকুড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে। অন্যদিকে গ্রেপ্তার আইউব আলী একই ইউনিয়নের চকদফর গ্রামের ইনসান আলীর ছেলে। তাঁরা পরস্পরের বন্ধু ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত রফিকুলের বড় ভাই আমজাদ হোসেন বাদী হয়ে আইউব আলীর বিরুদ্ধে পাটগ্রাম থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

পুলিশ, এলাকাবাসী ও মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহার সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত আইউব আলীর শ্বশুরবাড়ি পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নে। অভিযুক্ত আইউব শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে তাঁর বন্ধু রফিকুলের অটোরিকশাটি চার হাজার টাকায় ভাড়া নেন। রফিকুলকে সঙ্গে নিয়ে গতকাল দুপুরে পাটগ্রামের দহগ্রাম ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামে শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছান আইউব আলী। বিকেলে দুই বন্ধু ওই গ্রামের পাশে তিস্তা নদীর ওপারে চরে বেড়াতে যান। সন্ধ্যায় তিস্তার চরে মদ্যপানের পর আইউব আলী বন্ধু রফিকুলকে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। হত্যার পরে রফিকুলের লাশ তিস্তার চরে বালুচাপা দেন আইউব। রাতে রফিকুলকে ছাড়া আইউব আলী শ্বশুরবাড়িতে ফিরলে স্বজনেরা তাঁকে রফিকুলের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেন। তখন আইউব আলীর কথাবার্তা ও চলাফেরা সন্দেহজনক মনে হলে স্থানীয় লোকজন দহগ্রাম ইউনিয়ন পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই আইউব আলীকে আটক করে তিস্তার চর থেকে রফিকুলের লাশ উদ্ধার করে।

খবর পেয়ে নিহত রফিকুলের স্বজনেরা আজ শনিবার ভোরে পাটগ্রামে এসে তাঁর লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় রফিকুলের বড় ভাই থানায় মামলা করলে আইউব আলীকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পুলিশ রফিকুলের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য সকালে লালমনিরহাট জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। মামলার এজাহারে রফিকুলের অটোরিকশা আত্মসাতের জন্য আইউব আলী তাঁকে হত্যা করেছেন বলে ধারণা করার কথা বলা হয়।

পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, রফিকুলকে হত্যার পর তাঁর অটোরিকশা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা ছিল আইউব আলীর। লাশের সুরতহালে গলায় প্লাস্টিকের রশি দিয়ে প্যাঁচানোর দাগ পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তার আইয়ুব আলীকে আজ সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে।