টঙ্গীতে মসজিদ কমিটি নিয়ে দুই পক্ষের মারামারি, আহত ৫

গাজীপুরের টঙ্গীতে এক মসজিদের কমিটি কেন্দ্র করে মুসল্লিদের দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে। আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর টঙ্গীর কাজী বাড়ি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন অন্তত পাঁচ মুসল্লি। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মসজিদটিতে কমিটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। পরে মসজিদের মুসল্লিদের একপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৮ জুলাই ২৯ সদস্যবিশিষ্ট নতুন কমিটির অনুমোদন দেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ওয়াক্ফ প্রশাসকের কার্যালয়। এতে সভাপতি পদে কাজী নুরুল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক পদে কাজী আশরাফুজ্জামান নির্বাচিত হন। কিন্তু আশরাফুজ্জামানের ইচ্ছা ছিল সভাপতি হওয়ার। তাই কমিটি অনুমোদন দেওয়ার পর থেকেই এর বিরোধিতা করছিলেন আশরাফুজ্জামান।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, শুক্রবার জুমার নামাজের খুতবার আগে নুরুল আমিন ওয়াক্ফ প্রশাসনের অনুমোদিত কমিটি নিয়ে মুসল্লিদের উদ্দেশে কথা বলতে যান। কমিটি নিয়ে কথা শুরু করতেই আশরাফুজ্জামান সব মুসল্লির সামনে নুরুল আমিনের বিরোধিতা করেন। কমিটির বিভিন্ন বিষয়ে আপত্তি তোলেন। এ নিয়ে মসজিদের ভেতর দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। পরে নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হতেই দুই পক্ষের লোকজন মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় আহত হন অন্তত পাঁচজন।

এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি কাজী নুরুল আমিন মুঠোফোনে বলেন, ২০১০ সালের পর থেকে কাজী আশরাফুজ্জামান জোরপূর্বক নিজেকে সভাপতি বানিয়ে মসজিদ পরিচালনা করে আসছিলেন। তিনি মসজিদের আয়-ব্যয়ের হিসাব ঠিকমতো দিচ্ছিলেন না। পরে একটি পক্ষ আবেদন করলে ওয়াক্ফ প্রশাসকের কার্যালয় তাঁকে (নুরুলকে) সভাপতি করে কমিটি অনুমোদন দেয়। কমিটিতে আশরাফুজ্জামানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। কিন্তু তারপরও তিনি এ কমিটি মানেন না। এ নিয়ে কয়েক দিন ধরেই বিরোধিতা করছেন তিনি। আজ জুমার নামাজের আগে কমিটি নিয়ে কথা বলতে গেলে তিনি (আশরাফুজ্জামান) সবার সামনেই তর্কে জড়ান। পরে নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হলে দলবল নিয়ে হামলা চালান। এতে তাঁর পক্ষের চারজন আহত হন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘তাঁরা (নুরুল আমিন) কারও সঙ্গে পরামর্শ না করেই গোপনে ওয়াক্ফ প্রশাসকের কার্যালয় থেকে কমিটির অনুমোদন নিয়ে আসছেন। এই কমিটিতে মোতোয়ালি রাখা হয়নি, পাশাপাশি কোনো নিয়মও মানা হয়নি। আমি আজ মসজিদে এর প্রতিবাদ করতে গেলে নুরুল আমিন আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে তর্কে জড়ান। পরে মসজিদ থেকে বের হতেই দলবল নিয়ে আমার ওপর হামলা করেন। তাঁরা আঘাত করে আমার ছেলের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছেন।’

আশরাফুজ্জামান আরও বলেন, ‘আমি যদি মসজিদের আয়-ব্যয়ের হিসাব ঠিকমতো না-ই দিয়ে থাকি, তবে আমাকে কমিটিতে রাখা হয়েছে কেন? তা ছাড়া স্থানীয় সংসদ সদস্য, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা আছেন। চাইলে তাঁরাও তো আমার বিচার করতে পারেন। এসব অভিযোগ বানোয়াট।’

এ বিষয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জাহাঙ্গীর বলেন, খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মুসল্লিদের বুঝিয়ে শান্ত করেছেন। মূলত কমিটি নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। তারপরও কেউ চাইলে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে।